জার্মানির রাস্তায় ভিড়ের মধ্যে উঠে পড়েছে বেপরোয়া গাড়ি। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
জার্মানিতে বড়দিনের বাজারে ‘হামলা’। ভিড়ে ঠাসা রাস্তার উপর প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে এল গাড়ি। তার ধাক্কায় অনেকে ছিটকে পড়লেন, গাড়ির চাকায় পিষে গেলেন বহু মানুষ। ভিড়ের মধ্যে অন্তত ৪০০ মিটার এগিয়ে গেল ওই ঘাতক গাড়ি। পরে তার চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি সৌদি আরবের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
জার্মানির ম্যাগডেবার্গ শহরের ঘটনা। রাজধানী বার্লিন থেকে ওই শহরের দূরত্ব প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। বড়দিন উপলক্ষে সেখানে জমজমাট বাজার বসেছিল। বহু মানুষ সেই বাজারের রাস্তায় ভিড় করেছিলেন। চলছিল কেনাকাটা। আচমকা সেই রাস্তায় ভিড়ের উপর উঠে পড়ে চারচাকা গাড়ি। ইচ্ছাকৃত ভাবেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে। ফলে একে ‘হামলা’র তকমা দেওয়া হয়েছে। গাড়ির চালক সৌদি আরবের বাসিন্দা হলেও দীর্ঘ দিন জার্মানিতেই প্রবাসী হিসাবে থাকছিলেন। কী কারণে এই ‘হামলা’ তিনি করলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ম্যাগডেবার্গের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে জার্মান পুলিশ। আহতের সংখ্যা ৬০-এরও বেশি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যাতে দেখা গিয়েছে, রাস্তায় থিকথিকে ভিড়ের মাঝে আচমকা গাড়িটি উঠে পড়ে। নির্বিচারে মানুষকে ধাক্কা মারতে মারতে তা এগিয়ে যায়। ভিড়ের মধ্যে ঢুকেও গাড়ির গতি এতটুকু কমেনি। রাস্তার শুরুর দিকে ৪০০ মিটারের মধ্যে যত জন ছিলেন, তাঁরা আহত হয়েছেন। অনেকে পড়ে গিয়ে চাকার নীচে পিষে গিয়েছেন। গাড়িটি ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরের দৃশ্য আরও করুণ। রাস্তা জুড়ে শুধু মানুষের গোঙানির শব্দ। সেই ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ রাস্তায় পড়ে ছটফট করছেন, তাঁদের শুশ্রূষার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ (এই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘাতক গাড়ির চালকের নাম এখনও জানা যায়নি। তবে তিনি সৌদির বাসিন্দা, পেশায় ডাক্তার। ২০০৬ সাল থেকে তিনি জার্মানিতে থাকছেন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই হামলার নেপথ্যে তিনি একাই ছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। ফলে নতুন করে আর কোথাও এই ধরনের হামলার সম্ভাবনা নেই, জানিয়েছেন জার্মান পুলিশ আধিকারিক। তিনি আরও জানিয়েছেন, একটি কালো রঙের বিএমডব্লিউ চালাচ্ছিলেন অভিযুক্ত। গাড়িটি তিনি ভাড়া করেছিলেন। চালকের পাশের আসনে একটি ব্যাগ ছিল। তাতে বিস্ফোরক কোনও পদার্থ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।