Donald Trump

প্রথম বৈঠকেই অভিবাসী-বার্তা ট্রাম্প প্রশাসনের

আমেরিকার নতুন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো বিনা নথিতে আমেরিকায় থাকা ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি তুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:৫০
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই সে দেশের নতুন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো বিনা নথিতে আমেরিকায় থাকা ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি তুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে। অর্থাৎ কোনও রাখঢাক না করে নতুন ইনিংসের শুরুতেই ওয়াশিংটন নয়াদিল্লিকে বুঝিয়ে দিতে চাইল, অবৈধ অভিবাসী নিয়ে নতুন যে নীতি নেওয়া হচ্ছে তাতে ভারতকে বন্ধু হিসেবে রেয়াত করার কোনও সম্ভাবনাই নেই।

Advertisement

বৈঠকের পরে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভারত এবং আমেরিকার অংশীদারিকে জোরদার করতে আজ বৈঠকে বসেছিলেন আমেরিকার বিদেশসচিব রুবিয়ো এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সহযোগিতার বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, উচ্চপ্রযুক্তি ক্ষেত্র, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, শক্তি এবং ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতা। এর পরেই বলা হয়, ‘‘রুবিয়ো অবশ্যই জোর দিয়ে ভারতের কাছে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে আমেরিকার উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।’’

বৈঠকের পরে নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন জয়শঙ্কর, যেখানে স্বাভাবিক ভাবেই এই অভিবাসনের বিষয়টির উল্লেখ নেই। তাঁর কথায়, “আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খতিয়ে দেখা হয়েছে বৈঠকে। রুবিয়ো এই সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরেই এগিয়ে নিয়ে চলার এক কারিগর। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক উদ্বেগগুলি নিয়েও কথা হয়েছে। আমাদের কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও পোক্ত করতে এক সঙ্গে কাজের লক্ষ্যে আমরা প্রস্তুত।”

আমেরিকায় কত জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়েছে সে বিষয়ে দিল্লির তরফে এখনও স্পষ্ট কোনও সংখ্যা জানানো হয়নি। আমেরিকার হিসাব অনুযায়ী তা ১৮ হাজারের মতো। তবে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসন রুখতে দু’দেশই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে। এই সহযোগিতার কারণেই আমেরিকা থেকে সর্বশেষ যে ভারতীয়দের দেশে ফেরানো হয়েছে, তাঁদের চার্টার্ড বিমানে নিয়ে আসা হয়েছে। ভারত থেকে আমেরিকায় যাওয়া বৈধ অভিবাসীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই সহযোগিতা বলে জানিয়েছেন জয়সওয়াল।

রিপোর্টে প্রকাশ পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাত— এই তিনটি রাজ্য থেকেই সবচেয়ে বেশি অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে। শিখ অধ্যুষিত রাজ্য পঞ্জাব এবং তার প্রতিবেশী হরিয়ানা থেকে যেন তেন প্রকারেণ আমেরিকা ও কানাডা যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে দীর্ঘদিন থেকেই। বেকারত্ব বৃদ্ধি, কৃষি ক্ষেত্রে দুর্দশা, মাদকের নেশার ফলে সর্বস্বান্ত হয়ে পঞ্জাবের যুবকেরা আমেরিকায় পৌঁছে বেআইনি ভাবে থেকে যাচ্ছেন।

আমেরিকার 'ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট' বা আইসিই-র গত বছর নভেম্বরে প্রকাশিত এক তথ্যে জানানো হয়, ১৭ হাজার ৯৪০ জন ভারতীয়কে প্রত্যর্পণের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল্লির তরফে ট্রাম্প প্রশাসনকে একটা বার্তা দেওয়া হচ্ছে যাতে ওয়াশিংটন কোনও ধরনের বাণিজ্যিক বিধি-নিষেধ নয়াদিল্লির উপরে আরোপ না করে।

পাশাপাশি, অবৈধ অভিবাসন রুখতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার কেড়ে নেওয়ার যে নির্দেশ ট্রাম্প দিয়েছেন, তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের নির্দেশ, আমেরিকায় জন্ম নেওয়া শিশুর বাবা-মায়ের যে কোনও এক জনের যদি আমেরিকার নাগরিকত্ব না থাকে, তবে শিশুটি এ দেশের নাগরিকত্ব পাবে না। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে নির্দেশটি কার্যকর হওয়ার কথা।

Advertisement
আরও পড়ুন