বৃহস্পতিবার শেষ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে তিন দিনের ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন। ছবি: রয়টার্স।
পঞ্চদশ শীর্ষ সম্মেলনে ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) রাষ্ট্রগোষ্ঠীর সম্প্রসারণের ব্যবস্থা পাকা করে ফেললেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের তৃতীয় তথা শেষ দিনে ব্রিকস গোষ্ঠীতে যোগদানের জন্য ছ’টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হল। এশিয়ায় ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং সৌদি আরব, আফ্রিকার মিশর এবং ইথিওপিয়ার পাশাপাশি এই তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনাও।
গত ২২ অগস্ট ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন শুরুর আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিনের তরফে ওই রাষ্ট্রগোষ্ঠীর সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই উদ্যোগে শামিল হয়েছিল রাশিয়াও। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে সদস্য এবং আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপ্রধানেরা সর্বসম্মত ভাবে সেই প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। এর ফলে চিনের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত হল বলেই কূটনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, চিনের উদ্দেশ্য হল আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জি৭-এর সমকক্ষ একটি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী তৈরি করা, যার রাশ থাকবে চিনের হাতে। অর্থাৎ, পুরনো ব্লক রাজনীতির ধাঁচে আমেরিকার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী অক্ষ তৈরি করা। আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়ার মোকাবিলার জন্য সেই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করায় গ্রেফতারির আশঙ্কায় দক্ষিণ আফ্রিকায় যাননি পুতিন। মস্কোর প্রতিনিধি হিসেবে হাজির ছিলেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
ব্রিকসের পঞ্চদশ শীর্ষ সম্মেলনে ভারত-সহ পাঁচ সদস্যরাষ্ট্রের পাশাপাশি যোগ দিয়েছেন প্রায় ৩০টি পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। তাঁদের সকলেই ব্রিকসের সদস্য হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চিনের তরফে ব্রিকসের সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেওয়া হলেও ভারত তাতে সায় দেয়নি। কারণ বিদেশ মন্ত্রকের আশঙ্কা ছিল, জিনপিং সরকার চেষ্টা করছে যে সব দেশে তাদের অর্থনৈতিক প্রভাব এবং আধিপত্য বেশি তাদের ব্রিকস গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত করতে। কার্যক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।