প্রতীকী চিত্র।
১০ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে চলেছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। নিজস্ব প্রস্তুতি তো আছেই, অনেকেই সিলেবাস রিভিশনের কাজও শুরু করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার পর এটা স্পষ্ট যে, পড়াশোনা নয়, বরং কী ভাবে উত্তর লিখলে নম্বর তোলা সহজ হবে কিংবা মাধ্যমিকের সময়ে পরীক্ষার খাতা কেমন করে সাজাতে হবে, সে ক্ষেত্রে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে— এই সব নিয়েই চিন্তা বাড়ছে।
মুশকিল আসানে রইল কিছু পরামর্শ। যে হেতু প্রথম বার নিজের স্কুলের বদলে অন্য স্কুলে সবাই পরীক্ষা দিতে যাবে,স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে চিন্তা হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই পরীক্ষার দিনগুলিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে সময় নিয়ে পৌঁছে যেতে হবে। নিজের রোল নম্বর খুঁজে নির্দিষ্ট জায়গায় বসার পরে প্রশ্নপত্র পাওয়ার অপেক্ষা করতে হবে। সাধারণত পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র হাতে আসে।
এ বার প্রশ্নপত্র খতিয়ে দেখে পেন্সিল দিয়ে মার্ক করে নিতে হবে, কোন কোন প্রশ্নের উত্তরগুলি আগে লেখা সহজ হবে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে উত্তরপত্র দেওয়া হয়। তাই তাতে আগে অ্যাডমিট কার্ড দেখে নিজেদের নাম, রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় ও কোন ভাষায় পরীক্ষা দেবে, তা উল্লেখ করতে হবে। নাম বা অন্য কোনও তথ্য লিখতে বা কোনও নির্দেশিকা বুঝতে সমস্যা হলে পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের ডেকে তাঁদের সাহায্য নিতে হবে। কারণ এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সঠিক ভাবে সঠিক স্থানে লেখা প্রয়োজন। তা না হলে পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে।
খাতার চার দিকে মার্জিনও দেওয়া যেতে পারে, আবার পরীক্ষার্থীরা তা ভাল ভাবে ভাঁজ করেও উত্তর লেখা শুরু করতে পারে। পরিচ্ছন্ন ভাবে উত্তর লেখার পাশাপাশি, প্রতিটি প্রশ্নের নম্বর এবং তার উত্তর যেন স্পষ্ট ভাবে লেখা থাকে। সম্ভব হলে প্রত্যেকটি উত্তরের শেষে স্কেল দিয়ে লাইন টেনে দেওয়া যেতে পারে। একটি বিভাগের সমস্ত উত্তর যেন একই জায়গায় সাজানো থাকে।
জীবনবিজ্ঞানে থিয়োরির পাশাপাশি, ছবি এঁকে অধ্যায়ের বিশেষ বিশেষ অংশ বোঝানোর মতো প্রশ্নও থাকে। তাই থিয়োরির পাশাপাশি, ছবি এঁকেও সমস্ত অধ্যায়ের বিষয়গুলি চর্চায় রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে চোখের লম্বচ্ছেদ, প্রতিবর্ত চাপের বিভিন্ন অংশ, প্রাণী ও উদ্ভিদ কোষের মাইটোসিস ও মিয়োসিস এর বিভিন্ন দশা (বিশেষত মেটাফেজ ও অ্যানাফেজ) নিয়ে চর্চা থাকা প্রয়োজন গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্নে যদি সর্বমোট চারটি অংশকেই চিহ্নিত করতে হয়, তা হলে ওই চারটি অংশ ছাড়া অন্য কোনও অংশের নাম লেখা চলবে না।
মেন্ডেলের বংশগতি সংক্রান্ত দ্বিসংকর জনন,অসম্পূর্ণ প্রকটতা, হিমোফিলিয়া, থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ ও লক্ষণ এবং চেকার বোর্ডের মাধ্যমে জেনেটিক রোগের ক্রস, নাইট্রোজেন চক্র, জৈব বিবর্ধন, ইউট্রফিকেশন, বিভিন্ন দূষণের কারণ ও ফলাফল, জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব,এন্ডেমিক প্রজাতি,বহিরাগত প্রজাতি,বায়োডাইভার্সিটি হটস্পট— প্রায় প্রতিটি অধ্যায় থেকেই প্রতি বছর প্রশ্ন ছোট-বড় প্রশ্ন থাকে। তাই পাঠ্যবই ভাল ভাবে খুঁটিয়ে পড়তে হবে।
পাশাপাশি, টেস্ট পেপারের মডেল প্রশ্ন সলভ করার অভ্যাসও রাখতে হবে। ঘড়ি ধরে সময় দেখে সপ্তাহে অন্তত দু’টি করে প্রশ্নপত্রের অনুশীলন করা প্রয়োজন। তবে, শুধু পড়াশোনাই নয়, নিজের শরীরের যত্নও নিতে হবে সমান ভাবে। প্রতিদিন হালকা খাবার খাওয়া, সময় মতো ঘুমিয়ে পড়া এবং হালকা শরীর চর্চার অভ্যাস যথেষ্ট। তবেই সারা বছরের পড়াশোনা আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষার তিন ঘণ্টার মধ্যে খাতায় প্রতিফলিত হওয়া সম্ভব।
(লেখিকা যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলে জীবনবিজ্ঞানের অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার)