ইজ়রায়েলি বিমানহানায় বিধ্বস্ত গাজা। ছবি: রয়টার্স।
এ বার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার প্যালেস্তেনীয় শরণার্থী শিবিরে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করল ইজ়রায়েলি বায়ুসেনা। সোমবার বিকেলে জ়াবালিয়া এলাকার ওই শরণার্থী শিবিরে ইজ়রায়েলি বোমাবর্ষণে নারী ও শিশু-সহ বহু প্যালেস্তেনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। গত ৭২ ঘণ্টার সংঘর্ষে ২৩ লক্ষ প্যালেস্তেনীয়র বাসভূমি গাজ়ায় এক লক্ষ ২০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক হাজার ঠাঁই নিয়েছিলেন জ়াবালিয়ার শরণার্থী শিবিরে। ইজ়রায়েলি বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে গাজ়ার একটি হাসপাতালও।
শনিবার ভোরে প্যালেস্তেনীয় সশস্ত্র হামাসের আল কাশিম ব্রিগেডের রকেট হামলার পর থেকেই ইজ়রায়েলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজ়ায় সর্বাত্মক সেনা অভিযানের কথা ঘোষণা করেছিলেন। পাশাপাশি প্যালেস্তেনীয়দের গাজ়া ছেড়ে চলে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকেই গাজ়ায় ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমানহানা চলছে। এমনকি, ‘প্যালেস্তাইন স্বশাসিত কর্তৃপক্ষের’ নিয়ন্ত্রণাধীন ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এলাকায় আল আকসা মসজিদ সন্নিহিত অঞ্চলে মুসলিম জনবসতির উপর হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা।
গাজ়া ভূখণ্ডে স্থলপথে হামলা চালাতে প্রায় এক লক্ষ ইজ়রায়েলি সেনা সীমান্তে জড়ো হয়েছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে। ‘জবাব’ আসছে হামাসের তরফেও। ইতিমধ্যেই গাজ়া সীমান্ত পেরিয়ে দক্ষিণ ইজরায়েলের বেশ কয়েকটি এলাকায় ঢুকে হামলা চালিয়েছে আল কাশিম ব্রিগেডের যোদ্ধারা। ডেরট, কাফর আজ়া, বেরি, রেইম, বেরশেভা, মাজ়েন, ওফাকিনের মতো শহরগুলিতে চলছে রকেটহানাও। এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় ইজ়রায়েলে রাজধানী জেরুসালেম থেকে সাইরেনের তীব্র শব্দ শোনা গিয়েছে। তবে সেখানে হামলার কোনও খবর জানায়নি নেতানিয়াহু সরকার।
লেবাননে সক্রিয় হেজবুল্লা বাহিনী ইতিমধ্যেই ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা করেছে। তারা হামলা চালালে উত্তর ইজ়রায়েলেও লড়াই শুরু হবে। ঘটনাচক্রে, হামাস এবং হেজবুল্লা দু’টি গোষ্ঠীর সঙ্গেই ‘ঘনিষ্ঠতা’ রয়েছে ইরানের। পশ্চিম এশিয়ার সংবাদমাধ্যম আল জাজ়িরা জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ইজ়রায়েলি সেনার ‘অপারেশন আয়রর সোর্ড’-এর জেরে গাজ়ায় প্রায় ৫৭০ জন প্যালেস্তেনীয় নিহত হয়েছেন। অন্য দিকে, আল কাশিম ব্রিগেডের ‘অপারেশন আল আকসা ফ্লাড’-এর বলি ৮০০-র বেশি ইজ়রায়েলি সেনা এবং অসামরিক নাগরিক।