মেলবোর্নে অর্ধশতরানের পর স্যাম কনস্টাস। ছবি: রয়টার্স।
যশপ্রীত বুমরা হয়তো কোনও দিন ভাবেননি অভিষেক ইনিংসে নিজের তৃতীয় বলেই ‘র্যাম্প’ শট খেলবেন স্যাম কনস্টাস। তাই প্রথমে খানিকটা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। হননি কনস্টাস। তার পরেও সেই একই চেষ্টা করেছেন তিনি। এমনকি, বুমরার বলে ‘রিভার্স স্কুপ’-এ ছক্কাও মেরেছেন তিনি। টেস্টে ৪৪৮৩ বল পরে ছক্কা খেতে হয়েছে বুমরাকে। প্রথম ইনিংসেই নজর কেড়েছে কনস্টাসের লড়াকু মনোভাব। অজান্তেই তাঁকে এই লড়াইয়ের জন্য তৈরি করেছিলেন তাঁর পিতা।
প্রথম দিন খেলা শেষে কনস্টাসের ক্রিকেটার তৈরি হওয়ার গল্প বলেছেন তাঁর ভাই বিলি। পেশায় ফিজিয়োথেরাপিস্ট বিলি জানিয়েছেন, কী ভাবে তাঁদের ক্রিকেটার করে তোলার চেষ্টা করেছিলেন তাঁদের পিতা। তিনি হতে পারেননি। কিন্তু কনস্টাস পেরেছেন। বিলি বলেন, “ছোটবেলায় বাবা যখন প্রথম বার আমাদের বোলিং মেশিনের সামনে নিয়ে গিয়েছিল তখন মেশিনে ভুল করে ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা ভেবে ৯০ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে বল করার বোতামে চাপ দিয়েছিল। সেই বলও ব্যাটের মাঝে খেলেছিল স্যাম। তখন ওর বয়স পাঁচ বছর। বাবা অজান্তেই ওকে কঠিন লড়াইয়ের জন্য তৈরি করেছিল। ওর স্বপ্ন ছিল অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ক্রিকেট খেলা। সেই স্বপ্ন এত দিনে পূর্ণ হয়েছে।”
ম্যাচের আগের দিন কনস্টাসের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর ভাইয়ের। বিলি জানিয়েছেন, প্রথম ইনিংসে নামার আগে কোনও চাপ ওর মধ্যে দেখিনি। তিনি বলেন, “ও আমাকে বলেছিল, ‘বিলি, আমাকে একটি ম্যাসাজ দিয়ে দিবি।’ তখন আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তুই কত রান করবি। জবাবে ও বলেছিল, ‘চিন্তা করিস না। কিছু রান তো করবই।’ ওর মধ্যে কোনও চাপ আমি দেখিনি।”
জীবনের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেছেন কনস্টাস। এক বারও দেখে মনে হয়নি চাপে রয়েছেন। শুধু বুমরা নন, মহম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপদের বিরুদ্ধেও বড় শট খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসাবে অর্ধশতরান করেছেন ১৯ বছরের তরুণ। শেষ পর্যন্ত ৬৫ বলে ৬০ রান করে আউট হয়েছেন। তবে প্রথম ইনিংসে তিনি যে ভাবে ব্যাট করেছেন তাতে তাঁকে লম্বা রেসের ঘোড়া মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।