১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা দেওয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। —ফাইল চিত্র।
সোমবার থেকে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। মোট ২২টি জেলার শ্রমিকদের এই টাকা দেওয়া হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, মোট দু’হাজার ৬৫০ কোটি টাকা পাঠানোর (রিলিজ) প্রক্রিয়া হয়েছে প্রথম দিন। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চের মধ্যে এই টাকা দেওয়া হবে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে।
সোমবার শবে বরাতের কারণে সরকারি ছুটি ছিল। সরকারি ছুটি থাকলেও, ১০০ দিনের কাজের টাকা বণ্টন শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার কারণে যে সব শ্রমিক গত দু’বছর টাকা পাননি, তাদের রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাঁদের পাওনা দেওয়া হবে। প্রথমে বলা হয়েছিল ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে অর্থ দেওয়ার কাজ শুরু হবে। কিন্তু সমীক্ষার কাজে শ্রমিকদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে পরে তা পিছিয়ে ২৬ তারিখ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২৪.৫০ লক্ষ শ্রমিক এই অর্থ পাবেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ধর্নার দ্বিতীয় দিন রেড রোডের মঞ্চ থেকে ১০০ দিনের বকেয়া মজুরি নিয়ে বড় ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র টাকা দিল ভাল, কিন্তু আর কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে না তাঁর সরকার। রাজ্যে যে ২১ লক্ষ মানুষের ১০০ দিনের কাজের মজুরি বকেয়া রয়েছে, তা মেটাবে নবান্নই। মমতা বলেন, ‘‘২১ লক্ষ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২১ ফেব্রুয়ারি বকেয়া মজুরির টাকা পৌঁছে যাবে।’’
১০০ দিনের প্রকল্পের পাওনা নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের তৃণমূলের বক্তব্য মূলত দু’টি। এক, কাজ করানোর পরেও মজুরি আটকে রেখেছে কেন্দ্র। দুই, গত তিন বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও টাকা না পাঠানোয় রেগার কাজ স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। যার সরাসরি অভিঘাত পড়ছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। মমতা গত ৩ ফেব্রুয়ারি স্পষ্ট করে দেন, বকেয়ার দাবিতে তাঁর এবং তাঁদের আন্দোলন চলবে। সেই তালিকায় যেমন ১০০ দিনের কাজ রয়েছে, তেমনই রয়েছে আবাস যোজনা, সড়ক যোজনাও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘লড়াই তো হবেই। লড়াই তো চলবেই। খেলা তো হবেই। তবে আপনাদের টাকা আমরাই দেব। ২১ লক্ষ মানুষের বকেয়া মজুরি ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আমরাই পাঠিয়ে দেব।’’ সেই কাজ এ বার শুরু করল নবান্ন।