প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত ন’বছর ধরে রাজ্যে প্রাথমিকের ‘ব্রিজ কোর্স’ করানো হচ্ছে না! মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে রিপোর্ট দিয়ে জানাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। মামলাকারীদের কাছে ওই রিপোর্টের পাল্টা হলফনামা চান বিচারপতি। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি রিপোর্ট দিয়ে আদালতে জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে শেষ বার চাকরিরত বিএড ডিগ্রিধারী প্রাথমিকের শিক্ষকদের ছ’মাসের ‘ব্রিজ কোর্স’ করানো হয়েছিল। তার পর থেকে এই কোর্স আর করানো হয়নি। যদিও প্রাথমিকের শিক্ষকের জন্য প্রশিক্ষণ কোর্স করা বাধ্যতামূলক। প্রাথমিকের শিক্ষকের জন্য ডিএড বা ডিএলএড কোর্স করতে হয়। আগের নিয়ম অনুযায়ী, বিএড প্রশিক্ষিতরাও প্রাথমিকের শিক্ষক পদে চাকরি পাবেন। তবে তাঁদের চাকরি পাওয়ার এক বছরের মধ্যে একটি ছ’মাসের ব্রিজ কোর্স করতে হয়। কারণ, বিএড প্রশিক্ষণ উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকতার জন্য।
হাই কোর্টে সাত জন চাকরিপ্রার্থী মামলা করে দাবি করেছিলেন, ২০২০ সালে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কয়েক হাজার বিএড ডিগ্রিধারী শিক্ষক ব্রিজ কোর্স সম্পূর্ণ করেননি। ওই কোর্স না করেই এখনও চাকরি করেছেন। এই চাকরি স্থায়ী হতে পারে না। কারণ, জাতীয় শিক্ষক শিক্ষণ পর্ষদ (এনসিটিই)-এর নিয়ম মানা হয়নি। আদালতে মামলাকারীদের আর্জি, নতুন করে প্যানেল তৈরি করে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। প্রসঙ্গত, গত ৭ অগস্ট এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, নিয়মমাফিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই কী ভাবে প্রাথমিকের স্কুলে চাকরি করছেন কয়েক হাজার শিক্ষক? এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের রিপোর্ট তলব করেছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার শুনানিতে সেই তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি পর্ষদ রিপোর্টে জানিয়েছে, আবার নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা সম্ভব নয়। কারণ, ২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেলের মেয়াদ চলতি বছরের ২ এপ্রিল শেষ হয়েছে। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও শূন্যপদ নেই। এখন ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। মামলাকারীদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানান, প্রায় ১৬,৫০০ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় পর্ষদ। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বিএড প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের ৬ মাসের মধ্যে ‘ব্রিজ কোর্স’ করানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রায় পাঁচ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের এখনও অবধি সেই প্রশিক্ষণ নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘সরকারও এটা জানে, তাই ওই শিক্ষকদের বি ক্যাটেগরিতে বেতন দেওয়া হয়। এই অবস্থায় এখন ওই শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করে নতুন করে প্যানেল প্রকাশ করতে হবে।’’