সোমবার বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইট থেকে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এই চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছত্রছায়া না থাকলেও বহু প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যেরা অস্তিত্বহীন। কারও নাম না করে একটি খোলা চিঠিতে এমনই দাবি করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সোমবার দশ পাতার একটি খোলা চিঠিতে ‘জমি দখলকারী’র বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। অন্য দিকে, বিশ্বভারতীর মতো ঐতিহ্যশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিম্নগামী হওয়ার জন্য প্রাক্তন কর্মী, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং আধিকারিকদের থেকে শুরু করে অধ্যাপক এবং উপাচার্যদের নাম না করেও তাঁদের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন। এমনকি, বোলপুর-শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদেরও দোষী করেছেন উপাচার্য।
সোমবার বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইট থেকে বিদ্যুতের এই চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে। নিজের চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে পরজীবী প্রকৃতির ব্যক্তিরা বিশ্বভারতীর আশ্রয় ছাড়া কিছুই নন। অসাধু ছকের মাধ্যমে বিশ্বভারতী থেকে যে কোনও উপায়ে লাভবান হতে চেয়েছেন তাঁরা। নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্যসাধনে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজের লেখনীকেও বিকৃত করতে পিছপা নন তাঁরা।’’ কোন ব্যক্তিদের তিনি ‘পরজীবী’ বলেছেন অথবা তাঁদের কোন ‘অসাধু ছকের’ মাধ্যমে বিশ্বভারতীর ক্ষতিসাধন হয়েছে, তা নিয়ে বিশদ বিবরণ দেননি বিদ্যুৎ। তবে ওই চিঠিতে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এটা নতুন করে মনে হচ্ছে, যে নিজস্ব লাভের জন্য এঁরা বিশ্বভারতীকে নির্মম ভাবে শোষণ করতেও ছাড়েন না। এঁরাই জমি দখলকারীদের সমর্থন করেন।’’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৩ ডেসিমাল জমিদখলের অভিযোগ তুলেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শান্তিনিকেতনে অমর্ত্যর বাড়ি ‘প্রতীচী’র ১৩ ডেসিমাল জমি ফেরত চেয়ে তাঁকে উচ্ছেদের নোটিসও পাঠিয়েছেন তাঁরা। তা নিয়ে মামলা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। ওই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৫ মে। সে দিন শুনানির সময় সব পক্ষকে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে বীরভূম জেলা আদালত।
সোমবারের চিঠিতে কারও নাম না করলেও ‘জমি দখলকারী’ হিসাবে কি অমর্ত্যর বিরুদ্ধেই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদ্যুৎ? এমনই প্রশ্ন উঠছে।