ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে এখন থেকেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে তৃণমূল।
ত্রিপুরার আরও দুই বিজেপি বিধায়ক কলকাতায় এসে সাক্ষাৎ করে গেলেন তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে। সূত্রের খবর, শুক্রবার বরদৌলি টাউনের বিজেপি বিধায়ক আশিসকুমার সাহা ও সুরমার বিধায়ক আশিস দাস কলকাতায় এসেছিলেন। তৃণমূলের প্রথম সারির এক নেতার সঙ্গে তাঁর দক্ষিণ কলকাতার দফতরে বিজেপি বিধায়করা বৈঠক করেছেন বলে খবর। শনিবার সকালের বিমানে ফিরে গিয়েছেন আগরতলা। তৃতীয়বার নীলবাড়ি দখলের পর তৃণমূল নেতৃত্বের নজর এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যের দিকে। সেই তালিকার সবার উপরে ত্রিপুরা। যেখানে ২০২৩ সালের প্রথম দিকেই বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই লক্ষ্যেই এখন থেকে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে তৃণমূল। রণকৌশল অনুযায়ী বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের দিকে হাত বাড়িয়েছে বাংলার শাসকদল।
চলতি সপ্তাহেই কলকাতায় এসে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী তথা বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ। ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোটের বিরোধিতা করে আগেও তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ও সুদীপের সঙ্গে ছিলেন বর্তমানে বরদৌলি টাউনের বিজেপি বিধায়ক আশিস। কিন্তু ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে চলে যান তাঁরা। বর্তমানে ত্রিপুরার রাজনীতিতে কোণঠাসা সুদীপ-গোষ্ঠী। বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সমীকরণে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরোধী গোষ্ঠী বলেই পরিচিত সুদীপ-আশিসরা। তাই তাঁদের ক্ষোভ নিজেদের ত্রিপুরা দখলের কাজে লাগাতে চাইছে মমতার দল। তৃণমূল সূত্রের খবর, সুদীপ-গোষ্ঠীর সঙ্গে বর্তমানে সাত জন বিজেপি বিধায়ক রয়েছেন। এঁদের সকলের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে চলেছে কালীঘাটের তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের দফতর।
কলকাতা সফরের কারণ জানতে মোবাইলে ফোন করা হয়েছিল বরদৌলি টাউনের বিজেপি বিধায়ক আশিসকে। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। আর সুরমার বিধায়ক আশিসকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কথাবার্তা চললেও এখনই বিধায়কদের দলে যোগদান করানো হবে না। ত্রিপুরায় সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার পর ভোটের আগে সময় বুঝে বিজেপি বিধায়কদের তৃণমূলে নেওয়া হতে পারে। তাতে এক দিকে যেমন শাসকদল বিজেপি-কে জোর ধাক্কা দেওয়া যাবে, তেমনই ত্রিপুরার মানুষের কাছে বার্তা দেওয়া যাবে যে, সেখানে বিকল্প সরকার গঠনে প্রস্তুত তৃণমূল।