বুধবার ইডি দফতরে যাওয়ার কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছবি: পিটিআই।
বুধবার দিল্লিতে বিজেপি বিরোধী জোটের সমন্বয় কমিটির বৈঠক। ‘ইন্ডিয়া’র ওই কমিটির সদস্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি প্রথম সমন্বয় কমিটির বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন? প্রশ্ন উঠছে কারণ, ওই একই দিনে কলকাতায় ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে অভিষেকের পদক্ষেপ কী হবে? তা মঙ্গলবার দলের পক্ষে স্পষ্ট করা হল। বিকেলে এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং পার্থ ভৌমিক। সেখানেই পার্থ বলেন, “উনি (অভিষেক) তদন্তের মুখোমুখি হতে ভয় পান না৷ সেটা আগামিকাল আপনারা দেখে নেবেন।” এখানেই না থেমে তিনি বলেন, “আসলে অভিষেকের শিরদাঁড়া সোজা, শুভেন্দুর মতো শিরদাঁড়া বিক্রি করেননি।’’
তাঁকে যে ইডি আবার তলব করেছে তা নিজেই জানান অভিষেক। তিনিই নিজের এক্স হ্যান্ডলে রবিবার জানান, ‘‘ইন্ডিয়ার সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক ১৩ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে, যে কমিটির আমিও একজন সদস্য। কিন্তু ইডি ওই দিনই আমাকে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস দিয়েছে! এই মাত্র সেই নোটিস পেলাম। ৫৬ ইঞ্চি ছাতির কাপুরুষতা ও অন্তঃসারশূন্যতা দেখে বিস্মিত না হয়ে পারছি না।’’
প্রসঙ্গত, সোমবারই নবান্নয় সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেককে ইডির তলব নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেককে সারাক্ষণ বিরক্ত করা হচ্ছে। অকারণ হেনস্থা করা হচ্ছে ওকে। কোনও প্রমাণ নেই।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘বারবার অভিষেককে নিম্ন আদালত, হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে ছুটতে হচ্ছে বিচারের জন্য! কী হয়নি ওর বিরুদ্ধে?’’ এর পরে মঙ্গলবার তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠক। সেখানে মন্ত্রী শশী এই তলবের পিছনে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের ফলও একটা কারণ বলে দাবি করেন। তাঁর দাবি, অভিষেক এক দিন প্রচারে গিয়েছিলেন। ওই আসন বিজেপি ধরে রাখতে না পারার জন্যই এই তলব। রাজনৈতিক কর্মসূচি নষ্ট করে দিতেই অতীতের মতো বুধবারেও অভিষেককে ডাকা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শশী। বলেন, ‘‘ধূপগুড়ির হার সহ্য করতে না পেরেই তড়িঘড়ি অভিষেককে আরও এক বার ডাকা হয়েছে।’’
তৃণমূল নেতৃত্বর দাবি, ধারাবাহিক ভাবে অভিষেককে হেনস্থা করা হচ্ছে। তিনি উদাহরণও তুলে ধরেন। জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অভিষেকের নেতৃত্বে নবজোয়ার জনজোয়ারে পরিণত হয়। তার পর থেকেই বিজেপির টার্গেটে অভিষেক। সে কারণেই অভিষেকের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এজেন্ডার সময়েই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। অভিষেক একা নন, তাঁর স্ত্রী, শিশু সন্তানদেরও বিজেপির জন্য হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে।
মঙ্গলবার এই সাংবাদিক বৈঠকের সময়েই অন্য একটি অভিযোগে তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল ইডি দফতরে। এই প্রসঙ্গে পার্থের সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘দল আগেই বলেছে দুর্নীতি নিয়ে জ়িরো টলারেন্স। ওঁকে ডেকেছে, উনি গিয়েছেন সহযোগিতা করতে।’’