প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ওপর নজর রাখতে বিশেষ পর্যবেক্ষক দল তৈরি করে দিল নবান্ন। ফাইল চিত্র।
গ্রামীণ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ দিন টানাপড়েন চলেছে রাজ্যের। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ৮২০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ১১ লক্ষ গ্রামীণ আবাস নির্মাণের লক্ষ্যে। এ বার সেই আবাস বণ্টনে বিশেষ পর্যবেক্ষক দল তৈরি করে দিল নবান্ন। আবাস বণ্টনের কাজটি নির্ভুল ভাবে করার জন্য একুশ জন উচ্চপদস্থ আধিকারিককে নিয়োগ করেছে নবান্ন। যাঁদের মধ্যে রাখা হয়েছে আইএএস পদমর্যাদার ৩ জন অভিজ্ঞ আধিকারিককে। কেন্দ্রীয় সরকার বার বার অভিযোগ তুলেছে, যে এ রাজ্যে গ্রামীণ উন্নয়নের অর্থ নয়ছয় হয়েছে। তাই এ বার সেই অভিযোগ গোড়াতেই নির্মূল করতে এমন পর্যবেক্ষকদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পঞ্চায়েত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, আবাস যোজনায় ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির বরাত দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু ৪৯ লক্ষ উপভোক্তার তালিকা আগেই তৈরি করেছিল পঞ্চায়েত দফতর। এ বার সেই তালিকা ধরে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা চালিয়ে ন্যায্য উপভোক্তা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। যাচাইয়ের ক্ষেত্রে পুলিশের সাহায্য নিতেও বলা হয়েছে নবান্ন থেকে। এক দিকে যেমন ঊনপঞ্চাশ লক্ষ তালিকাভুক্ত উপভোক্তার বাড়ি চিহ্নিত করে সমীক্ষার কাজ শেষ করতে হবে। তেমনই যে কোনও ধরনের আর্থিক বেনিয়ম ঠেকাতে বলা হয়েছে। এই সমস্ত কাজের ওপর কড়া নজরদারি রাখতেই তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের। একুশ জনের এই পর্যবেক্ষক দলটি আরও যে বিষয়ে নজর রাখবে, তা হল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা পাওয়ার শর্তের বিষয়টিও। আবাস যোজনার সুবিধা যাদের প্রাপ্য নয়, তাঁরা যাতে কোনও ভাবেই আবাস যোজনার অর্থ না পান সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। যাঁরা আয়কর জমা দেন বা যাঁদের মোটরবাইক, স্কুটার বা দু’চাকার গাড়ি রয়েছে এমন কাউকে আবাস যোজনার আওতায় আনা যাবে না। এই ভাবে মোট তেরোটি বিষয় ঠিক করা হয়েছে। এই শর্তগুলি মূলত আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি শর্তের সঙ্গে রাজ্য সরকারও বেশ কিছু শর্ত সংযোজন করেছে এ ক্ষেত্রে। যাঁদের পাকাবাড়ি রয়েছে এবং ইতিমধ্যেই ইন্দিরা আবাস যোজনা, গীতাঞ্জলি-সহ এই ধরনের প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন তাঁরা কোনও ভাবেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা পাবেন না।