কুন্তলের ১ কোটি টাকা সংক্রান্ত বয়ান মানতে নারাজ শান্তনু। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে নিত্যনতুন তথ্য হাতে পাচ্ছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর আধিকারিকরা। এ বার ইডির তরফে কুন্তল ঘোষের বয়ান তুলে ধরে আদালতে দাবি করা হল, ১ কোটি টাকারও বেশি নিয়েছেন শান্তনু। এই বিপুল পরিমাণ টাকা নাকি শান্তনুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন কুন্তলই। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আর এক অভিযুক্ত কুন্তল ইডি হেফাজতে থাকাকালীন গত ১ এবং ২ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী সংস্থাকে এই বয়ানই দিয়েছিল। কুন্তল তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেন যে, বেআইনি কার্যকলাপের জন্যই এই টাকা দিয়েছিলেন। যদিও সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে শান্তনু বলেন, “কুন্তল এক পয়সাও দেয়নি।” সোমবার সকালে দু’দিনের ইডি হেফাজত শেষ হওয়ার পর বলাগড়ের এই যুবনেতাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয়। আদালতে ঢোকার আগে কুন্তলকে নিয়োগ দুর্নীতির ‘মূল চক্রী’ বলে দাবি করেন শান্তনু। সোমবার বিচারক শান্তনুকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারীদের অনুমান, চাকরিপ্রার্থীদের বেআইনি ভাবে নিয়োগ করানোর বিনিময়েই ওই টাকা দেওয়া হয়েছিল। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আর এক অভিযুক্ত, বেসরকারি বিএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি তাপস মণ্ডলের কাছ থেকে এই টাকা তুলেছিলেন কুন্তল। তারপর সেই অর্থ তুলে দেওয়া হয় শান্তনুর হাতে। ইডি এ-ও দাবি করে যে, তদন্তে দেখা গিয়েছে কুন্তল এবং শান্তনু রীতিমতো বোঝাপড়া করেই নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন। আদালতে শান্তনুর জামিন-আর্জির বিরোধিতা করে ইডির তরফে যে যে যুক্তি পেশ করা হয়, তাতে এই ১ কোটি টাকার প্রসঙ্গও ছিল।
ইডির তরফে আদালতে আগেই তাপসের বয়ান তুলে ধরে জানানো হয়, ২০১৬ সালে একটি আবাসনে শান্তনুর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাপসের। শান্তনুর উপর ভরসা রেখেই কুন্তলকে ১৯ কোটি টাকা দিয়েছিলেন তাপস। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতির নেপথ্যে বেশ কিছু বড় মাথা থাকলেও চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সেই সব প্রভাবশালীদের যোগসূত্র ছিলেন এই শান্তনু, কুন্তলরা। ইডি এ-ও দাবি করে যে, তাদের তদন্তে জানা গিয়েছে, চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কুন্তল তা তুলে দিতেন শান্তনুর হাতে। ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে, শান্তনুর বাড়িতে থাকা তালিকায় এমন ৭ জনের নাম রয়েছে, যাঁরা পরে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন।