CAA

সিএএ বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই ‘জয় হরিবোল’ শুভেন্দুর, মমতার হুঁশিয়ারির জবাব দিলেন শান্তনু

নীলবাড়ির লড়াইয়ের সময়েই উঠেছিল সিএএ জারি করার দাবি। কিন্তু তখন কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছিল করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই হবে কার্যকর। অবশেষে দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ের আগে লক্ষ্যপূরণ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ২০:৪৭
Reaction of BJP leader Suvendu Adhikari and Shantanu Thakur on CAA

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

অবশেষে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু হল গোটা দেশে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে লোকসভা নির্বাচনের আগে বাড়তি অক্সিজেন পেল রাজ্য বিজেপি। কারণ, বাংলায় মতুয়া ভোটের অঙ্ক মেলাতে খুবই জরুরি ছিল এই বিজ্ঞপ্তি। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তি জারির সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবের আবহ তৈরি হয়ে যায় পদ্ম-শিবিরে। বনগাঁ লোকসভা এলাকাতে তো বটেই মতুয়া অধ্যুষিত অন্যান্য জায়গাতেও শুরু হয়ে যায় উৎসব। রানাঘাটের সাংসদ তথা লোকসভার প্রার্থী জগন্নাথ সরকার ঢোল বাজাতে বাজাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। আর বনগাঁর সাংসদ তথা মতুয়া সমাজের নেতা সল্টলেকে বিজেপির রাজ্য দফতরে এসে মিষ্টিমুখ করান অন্য নেতাদের। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘একটা ইতিহাস তৈরি হল আজ। আজ থেকে ১০০ বছর পরে সরকার বদলে যেতে পারে কিন্তু কেউ উদ্বাস্তু হয়ে আসা মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না। ভবিষ্যতের জন্য বড় নিরাপত্তার গ্যারান্টি মিলল।’’

Advertisement

কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি জারির পরে পরেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানান। তবে শুভেন্দু এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডলে ‘হরি বোল’ লিখে মতুয়া সমাজের দেওয়া কথা রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘মোদীর গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি পূরণের গ্যারান্টি। ১৯৪৫ সাল থেকে ধর্মীয় কারণে উৎপীড়িত জনগোষ্ঠী মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রত্যেক ব্যক্তি সমনাগরিকত্বের দাবিতে সরব হয়েছেন। আজ অপেক্ষার অবসান হল।’’

প্রসঙ্গত, আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছেলের হাতে মোয়া? কাউকে নাগরিকত্ব দিতে পারবে না। জাস্ট শো অফ! বলবে, ‘আপনারা পোর্টালে নাম লেখান।’ তখন সব ধর্মের মানুষই নাম লেখাবেন। কিন্তু সেই নাম আদৌ কার্যকর হবে?’’ একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘‘এ জন্যই কি মতুয়া ভাই, নমঃশূদ্রদের আধার কার্ড বাতিলের চক্রান্ত হয়েছিল? কিন্তু আমরা তো সবাই নাগরিক। ভোট আজ আছে। কাল ফুরিয়ে যাবে। আর সিএএ একটা ছলনা। আমি বিশ্বাস করি, বাংলায় যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁরা সবাই এ রাজ্যের নাগরিক।’’ এর জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তুনু পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলছেন কিন্তু তিনি কি এই জবাবটা দেবেন পাসপোর্ট বানানোর সময়ে তাঁর পুলিশ মতুয়া সমাজের সদস্যদের থেকে কেন ১৯৭১ সালের আগের জমির দলিল চায়?’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আজ থেকে ১০০ বছর পরে কেউ প্রশ্ন তুলবেন কি না কথা দিতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী? আজ উদ্বাস্তু পরিবারের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নাগরিকত্বের নিশ্চয়তার গ্যারান্টি দিল মোদী সরকার।’’ রাজ্যের কারও নাগরিকত্ব কাড়তে দেব না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারিরও জবাব দিয়েছেন শান্তনু। তিনি বলেন, ‘‘সিএএ-র মাধ্যমে কারও নাগরিকত্ব কাড়া হবে না। এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য।’’

সঙ্ঘ পরিবারেরও দীর্ঘদিনের দাবি সিএএ। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এ নিয়ে অনেক আন্দোলনও করেছে। তার প্রেক্ষিতেই ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে এই আইন প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। সোমবার তার বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে পরিষদের বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব নিয়ে কাউকে ভুল বোঝানো ঠিক হবে না। বরং, সকলে যাতে নাগরিকত্ব পান সে ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য এই আইন নয়। উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আসা মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার উদ্যোগ।’’

আরও পড়ুন
Advertisement