R G Kar Hospital Incident

‘আরজি কর কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, মেনে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট’, বললেন রাজ্যের আইনজীবী সঞ্জয়

রাজ্য সরকারের আইনজীবী সঞ্জয় বসুর দাবি, সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার মনে করিয়ে দিয়েছে, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় বিষয়টি সারা দেশে মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তার অভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৪ ১৯:৫৫

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আরজি কর-কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আইনজীবী সঞ্জয় বসু। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে শুনানিপর্ব শেষের পরে তিনি বলেন, ‘‘মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট শুনানির সময় মনে করিয়ে দিয়েছে যে এই মামলাটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং একটি বিস্তৃত এবং পদ্ধতিগত সমস্যা যা সারা দেশে ডাক্তারদের প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার অভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে। কর্মক্ষেত্রে যৌন এবং অন্যান্য হিংসার ঝুঁকি যাঁদের বেশি।’’

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে মঙ্গলবার শুনানিপর্বে কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়টিও মঙ্গলবার উঠে আসে। মহিলা চিকিৎসকদের কী কী সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়, সে প্রসঙ্গ তুলে নিরাপদ কর্মস্থলের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকলের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের মন্তব্য, “তরুণ চিকিৎসকদের দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে হয়। পুরুষ ও মহিলা চিকিৎসকদের জন্য পৃথক ডিউটি রুম কিংবা বিশ্রাম ঘর নেই। নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে জাতীয় স্তরে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকল তৈরি করতে হবে। যদি মহিলারা নিজেদের কর্মস্থলেই নিরাপদ না থাকেন, তা হলে সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের অর্থ কী!”

সেই প্রসঙ্গ তুলে সঞ্জয় তাঁর বিবৃতিতে মনে করিয়ে দিয়েছেন, মহিলাদের উপর আক্রমণের বিষয়টি শুধুমাত্র আরজি কর-কাণ্ড বা পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, সামগ্রিক ভাবে গোটা দেশের সমস্যা। তিনি লিখেছেন, ‘‘মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট আজ তার আদেশের মাধ্যমে একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্স (এনটিএফ) গঠনের ঘোষণা করেছে। মহিলা চিকিৎসক এবং পেশাজীবীদের জন্য নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য টাস্ক ফোর্সকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেছে। সেই সঙ্গে জাতীয় স্তরে স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকলের কথাও বলা হয়েছে।’’

সঞ্জয় জানিয়েছেন, লিঙ্গবৈষম্যজনিত হিংসা প্রতিরোধ এবং মহিলাদের জন্য কাজের নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে জাতীয় স্তরের টাস্ক ফোর্স গড়ার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকেই পৃথক দায়িত্ব দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন এবং দু’মাসের মধ্যে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এনটিএফ-কে। পাশাপাশি, হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য লিপিবদ্ধ করার জন্য যে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দেশের অন্য সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন এই মামলায় রাজ্যের অন্যতম আইনজীবী সঞ্জয়। তাঁর পাশাপাশি মঙ্গলবার কপিল সিব্বল এবং মেনকা গুরুস্বামীও রাজ্য সরকারের আইনজীবী হিসাবে হাজির ছিলেন সুপ্রিম কোর্টে।

আরও পড়ুন
Advertisement