Graham Stuart Staines

গ্রাহাম স্টেইনস হত্যার মূল অপরাধী দারা সিংহ মুক্তি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে, ওড়িশা সরকারের মতামত তলব

দারার মুক্তির আর্জি প্রসঙ্গে মতামত চাওয়ার পাশাপাশি, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ ওড়িশা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, ‘‘এ ক্ষেত্রে অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর।’’

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৪ ১৭:৪৬

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

প্রায় ২৪ বছর ধরে জেলবন্দি তিনি। তাই অস্ট্রেলীয় মিশনারি গ্রাহাম স্টেইনস ও তাঁর দুই শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী, রবীন্দ্র পাল ওরফে দারা সিংহ সুপ্রিম কোর্টের কাছে মুক্তির আবেদন জানিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, ওড়িশায় বিজেপি ক্ষমতা দখলের পরেই!

Advertisement

দারার আবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট দু’সপ্তাহের মধ্যে ওড়িশা সরকারের মতামত চেয়েছে। সেই সঙ্গেই প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ ওড়িশা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, ‘‘এ ক্ষেত্রে অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর।’’ প্রসঙ্গত, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা মোহন মাঝি অতীতে অনেক বারই প্রকাশ্যে দারার মুক্তির পক্ষে সওয়াল করেছেন। তাই এ ক্ষেত্রে ওড়িশা সরকারের ‘সম্ভাব্য মতামত’ নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ২২ জানুয়ারি কেওনঝড়ের মোহনপুরে অস্ট্রেলীয় মিশনারি গ্রাহাম স্টেইনস ও তাঁর দুই শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বজরং দলের। কট্টর হিন্দুত্ববাদী দারা ওই সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। সেই সময়ে বজরং দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন প্রতাপ ষড়ঙ্গী। ঘটনাচক্রে, যিনি নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য তথা বালেশ্বরের বর্তমান বিজেপি সাংসদ। মূল অভিযুক্ত দারা সিংহের যাবজ্জীবন জেল হলেও তদন্তে রেহাই পেয়ে যায় বজরং দল। প্রতাপ এই ঘটনার সঙ্গে যাবতীয় যোগ অস্বীকার করেছিলেন। তবে তাঁকে পাল্টা জেরাও করেননি সরকারি আইনজীবী।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দারার পক্ষে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন। যিনি জ্ঞানবাপী এবং মথুরা শাহি ইদগাহ মামলায় হিন্দু পক্ষের আইনজীবী। স্টেইনস হত্যাকাণ্ডের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার ঘটনাটিকে ‘দুষ্কৃতী কার্যকলাপ’ বলে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন তথ্যে উঠে আসে স্টেইনসের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের ধর্মান্তরণের অভিযোগ তুলে ধারাবাহিক ভাবে প্রচার চালাচ্ছিল বজরং দল-সহ কয়েকটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। তারই পরিণতিতে হয় ওই হত্যাকাণ্ড।

ঘটনাচক্রে, ২০০৭-২০০৮ সালে ওড়িশারই কন্ধমল জেলায় গোষ্ঠীহিংসায় শতাধিক খ্রিস্টান নিহত হয়েছিলেন। বহু গির্জা ও বাড়ি পোড়ানো হয়। সে বারও অভিযোগের তির উঠেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল, বনবাসী কল্যাণ পরিষদের মতো সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ সংগঠনের দিকে। বছর দুয়েক আগে গুজরাতের বিজেপি সরকার আদালতে আবেদন জানিয়ে গোধরা পরবর্তী দাঙ্গা পর্বের বিলকিস বানো মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ জন ধর্ষক ও খুনিকে মুক্তি দিয়েছিল। তাঁদের ফুলের মালা পরিয়ে সংবর্ধনাও জানানো হয়েছিল। এ বার কি দারা সিংহের পালা?

আরও পড়ুন
Advertisement