Foetuses Recovered in Bankura

অবৈধ গর্ভপাত বাঁকুড়ার পলিক্লিনিকে, জোড়া ভ্রূণ মিলল নর্দমায়! স্বঘোষিত ডাক্তার ‘পাহাড়িবাবু’ ধৃত

সোনামুখী শহরে পুরসভা সংলগ্ন বেসরকারি পলিক্লিনিকে বেআইনি ভাবে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠছিল। রবিবার এক মহিলাকে বালতি করে কিছু নিয়ে গিয়ে নর্দমায় ফেলতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সোনামুখী শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৫
pahari Babu

(বাঁ দিকে) পলিক্লিনিকের সাইনবোর্ড। ধৃত ‘পাহাড়িবাবু’ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

নর্দমা থেকে জোড়া ভ্রূণ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য বাঁকুড়ার সোনামুখী পুরসভা সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় একটি পলিক্লিনিক থেকে বালতিতে ভরে ওই জোড়া ভ্রুণ এনে নর্দমায় ফেলা হয়েছিল। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সোনামুখী থানার পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছেন স্বঘোষিত এক চিকিৎসক। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম মানস মুখোপাধ্যায়। তিনি ওই পলিক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত।

Advertisement

সোনামুখী শহরে পুরসভা সংলগ্ন একটি বেসরকারি পলিক্লিনিকে দীর্ঘ দিন ধরে বেআইনি ভাবে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠছিল। রবিবার সাতসকালে এক মহিলাকে বালতি করে কিছু নিয়ে গিয়ে পুরসভা সংলগ্ন এলাকার নর্দমায় ফেলতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। ওই মহিলা পলিক্লিনিকে ফিরে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েক জন নর্দমার দিকে এগিয়ে যান। তাঁরাই দুটি ভ্রূণ দেখতে পান। পরে খবর যায় সোনামুখী থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রূণগুলো উদ্ধার করে সোনামুখী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ওই পলিক্লিনিকে অবৈধ ভাবে গর্ভপাত করানো হয়। স্থানীয়দের মোবাইলে করা একটি ভিডিওয়োয় (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) এক মহিলা বলছেন, ‘‘গর্ভাবস্থায় সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ওই পলিক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিল আমার এক আত্মীয়া। প্রাথমিক ভাবে গর্ভপাতের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করে ওই পলিক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। পরে ন’হাজার টাকায় রফা হয়। ওই ভ্রূণ ছাড়াও আর একটি ভ্রুণ নিয়ে গিয়ে নর্দমায় ফেলা হয়েছিল।’’ বলকা হাঁড়ি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সকালে আমি যখন স্থানীয় একটি দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম। সেই সময় দেখি ওই পলিক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত এবং নিজেকে চিকিৎসক হিসাবে দাবি করা মানস মুখোপাধ্যায় পলিক্লিনিক থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গে এক মহিলাও বেরিয়ে আসেন। মহিলার হাতে একটি বালতি ছিল। তিনি নর্দমার কাছে যান এবং বালতি উপুড় করে নর্দমায় কিছু ফেলে চলে যান পলিক্লিনিকে। আমাদের সন্দেহ হওয়ায় নর্দমায় উঁকি দিই। তখনই ভ্রূণ দুটি দেখতে পাই।’’

যে পলিক্লিনিকের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ উঠেছে, তারা অবশ্য অভিযোগ মানতে চায়নি। পলিক্লিনিকের বাইরে অভিযুক্ত মানস ওরফে পাহাড়িবাবু (যাঁর নামে পলিক্লিনিকের বাইরে সাইনবোর্ড রয়েছে এবং নামের পাশে চিকিৎসকের ডিগ্রি লেখা আছে) বলেন, ‘‘আমি এখানে থাকি না। অভিযোগের ব্যাপারেও কিছু জানি না।’’ তাঁর দাবি, ২০২৩ সাল থেকে বাড়িটি ভাড়া দিয়ে রেখেছেন তিনি। পলিক্লিনিকের কোনও কর্মী অভিযোগ প্রসঙ্গে কিচ্ছু বলতে চাননি। ওই ঘটনায় বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নিজেকে চিকিৎসক হিসাবে দাবি করা মানস মুখোপাধ্যায় ওরফে পাহাড়িবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাঁকে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হবে। ধৃতের শিক্ষাগত যোগ্যতার নথিপত্র এবং চিকিৎসা করার অনুমতি সংক্রান্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement