Bankura Incident

স্ত্রীকে মারধরের প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত স্বামী! মুখ খুললে ‘গণধর্ষণ ও খুনের হুমকি’র অভিযোগ বাঁকুড়ায়

আতঙ্কিত দম্পতি মঙ্গলবার বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারির দ্বারস্থ হন। ওই দম্পতির অভিযোগ শুনে তিনি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ইন্দাস শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ২০:১৯
husband was injured for protesting the beating of his wife in Bankura

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতীকী ছবি।

স্ত্রীকে মারধরের থেকে বাঁচাতে গিয়ে মত্ত যুবকদের হাতে আক্রান্ত হলেন স্বামী! শুধু তা-ই নয়, মুখ খুললে ‘গণধর্ষণ’ এবং ‘খুন’ করা হবে, এমন হুমকিও মিলেছে বলে অভিযোগ নির্যাতিতার পরিবারের। বাঁকুড়ার ইন্দাসের এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে স্থানীয় কয়েক জন তৃণমূল কর্মীর।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত রবিবার সন্ধ্যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ইন্দাসের বাসিন্দা ওই মহিলা তাঁর অসুস্থ কাকাশ্বশুরকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় গ্রামে কালী প্রতিমার বিসর্জন চলছিল। অভিযোগ, সেই বিসর্জন মিছিলে থাকা কয়েক জন মত্ত যুবক পথ আটকান ওই বধূর। তার পরই রং মাখাতে যান নির্যাতিতার কাকাশ্বশুরকে। বাধা দিতে গেলে ওই বধূর উপর চড়াও হন অভিযুক্তেরা। অভিযোগ, তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করা হয়।

বাড়ি ফিরে নির্যাতিতা তাঁর স্বামীকে পুরো ঘটনাটি জানান। সেই সঙ্গে গ্রামের কয়েক জন যুবকের নামও বলেন। অভিযোগ, তা শুনে প্রতিবাদ করতে গেলে নির্যাতিতার স্বামীকেও মারধর করেন অভিযুক্তেরা। এমনকি, স্বামীর সামনেই ওই বধূর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। তার পরেই থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই দম্পতি। কিন্তু ‘নিস্তার’ মেলেনি বলেই দাবি নির্যাতিতার পরিবারের। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। অভিযোগ, ‘প্রাণনাশ’ এবং ‘গণধর্ষণ’-এর হুমকি দেন অভিযুক্তেরা। আতঙ্কিত হয়ে মঙ্গলবার ওই দম্পতি বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারির দ্বারস্থ হন। তিনি দম্পতির অভিযোগ শুনে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

নির্যাতিতার দাবি, ‘‘মারধরের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। তাই হয়তো অভিযোগ দায়েরের পরেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে ভাবে আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাতে আমরা আতঙ্কিত। আমরা ঘটনার বিচার চাই।’’ নির্যাতিতার স্বামী বলেন, ‘‘আমার চোখের আড়ালে এবং সামনে যে ভাবে আমার স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে তা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে।’’

ঘটনা প্রসঙ্গে তৃনমূলের ইন্দাস ব্লক সভাপতি শেখ হামিদের বলেন, ‘‘অভিযুক্ত দলের কোনও পদে নেই। সমর্থক হতে পারেন। কিন্তু তিনি যাই করুন না কেন যদি তা অন্যায় হয়, তবে আইন আইনের পথে চলবে।’’ ঘটনার সঙ্গে শাসক দলের নাম জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার যুবনেতা কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘যেখানেই খুন, ধর্ষণ, তোলাবাজি, সিন্ডিকেটের গল্প, সেখানেই তৃণমূল ঢুকে রয়েছে। আমরা নির্যাতিতার পক্ষে আছি। দ্রুত বিচার না মিললে আমরা নির্যাতিতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলব।’’

অন্য দিকে, বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি আমরা। অভিযোগ পেলে কোনও রাজনৈতিক রং দেখে তদন্ত করা হয় না। দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement