কোপাইয়ের তীরে নির্মাণ পরিদর্শনে প্রশাসনিক কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
শান্তিনিকেতনে কোপাই নদীবক্ষে বেআইনি নির্মাণ গড়ে ওঠার প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন আশ্রমিক এবং স্থানীয়েরা। মঙ্গলবার সেই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিলেন প্রশাসনিক কর্তারা। শান্তিনিকেতন থানার গোয়ালপাড়া সংলগ্ন কোপাই নদীর পার দখল করে একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থা একটি নির্মাণ তৈরি করেছিল। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, মিষ্টি জলের নদীর তীর চারণভূমি। নদীর তীরের ৫০০ মিটার পর্যন্ত কোনও নির্মাণ করা যায় না।
স্থানীয়দের একাংশ এবং বিজেপি অভিযোগ করে শাসকদলের মদতেই রাতারাতি অবৈধ নির্মাণ তৈরি হয়। শুরু হয় প্রতিবাদ। এ নিয়ে কিছু দিন আগে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বিষয়টি নিয়ে বিস্তর জল ঘোলা হয়। নদীবক্ষের কয়েক মিটারের মধ্যেই কী ভাবে কংক্রিটের নির্মাণ করা যেতে পারে সে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। মঙ্গলবার বিতর্কিত ওই নির্মাণস্থল পরিদর্শন করতে আসেন বীরভূম জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। পরিদর্শনের পর এই কবিমোহনপুর মৌজায় এমন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বিধান রায় নিজে ওই বিতর্কিত নির্মাণ দেখতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে এসেছি। কোপাই নদীর প্রবাহপথ পরিবর্তন হয়েছে। এখন কোপাইয়ের তীরে বেশ কিছু রায়ত প্লট আছে বলে দাবি করেছেন কেউ কেউ। এসে দেখলাম সেটা। এখন পর্যালোচনা করে দেখব রায়ত প্লট আছে কি না।’’ জেলাশাসকের সংযোজন, ‘‘নদী যে হেতু তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে, এই অবস্থায় বেশ কিছু জমির কাছে নদী এগিয়ে এসেছে। তবে ২০১৩ সালে একটি মামলার প্রেক্ষিতে এখানকার ১১টি মৌজায় কোনও ধরনের নির্মাণকাজ করা যায় না। তাই আলোচনার পর আমরা নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। জমির মালিকানার বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’’
বস্তুত, সুপ্রিম কোর্টে শান্তিনিকেতনের তিনটি মৌজায় কোনও রকমের নির্মাণকাজ হওয়া নিয়ে মামলা চলছে। তার মধ্যে কী ভাবে কোপাইয়ের পারে এ ভাবে কংক্রিটের নির্মাণ গড়ে তোলা হচ্ছিল তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দিকেও আঙুল উঠেছে। জেলাশাসক অবশ্য আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের যা যা করা প্রয়োজন, সব করব।’’