প্রতীকী ছবি।
দোলের দিন সকালে হরিদেবপুরে পাওয়া গিয়েছিল অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর দেহ। পরে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই তরুণী নরেন্দ্রপুরের বাসিন্দা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল, গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে ডালিয়া চক্রবর্তী নামের ওই তরুণীকে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার সকালে অরুণাভ পাত্র এবং অর্জুন দাস নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মৃতার স্বামী রাহুল চক্রবর্তী অবশ্য আগেই অরুণাভ-সহ আরও বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তে নেমে তারা জানতে পেরেছে ডালিয়া ‘এসকর্ট সার্ভিসে’র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই ব্যবসায় ক্রমশ জড়িয়ে পড়ার পর তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় অরুণাভর। যদিও পুলিশ আনুষ্ঠানিক ভাবে এ কথা জানায়নি। মৃতার পরিবারও এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে একটি ‘সিকিউরিটি এজেন্সি’তে কাজ করা অরুণাভ ডালিয়ার এজেন্ট হিসাবে কাজ করতেন। পুলিশের অনুমান, অর্থের ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে বচসার জেরেই ডালিয়াকে খুন করেছেন অরুণাভ। সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ নরেন্দ্রপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ডালিয়া। তার পর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ লাইভ লোকেশনের মাধ্যমে শেষ বারের মতো ডালিয়ার অবস্থান জানতে পারেন তাঁর স্বামী রাহুল।
প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, হরিদেবপুর এলাকার একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে অরুণাভর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ডালিয়া। সেখানেই তাঁদের মধ্যে বচসা হয়। তার পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় ডালিয়াকে। পুলিশ মনে করছে, ডালিয়ার দেহকে সরানোর উদ্দেশেই অর্জুনকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন অরুণাভ। ঘটনাচক্রে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ডালিয়ার। তবে সব দিক খতিয়ে দেখে তবেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে হরিদেবপুরের জীবনমোহিনী ঘোষ পার্ক রোডের এক বাসিন্দা দেখতে পান রাস্তার কোণে এক তরুণী পড়ে রয়েছেন। কাছে গিয়ে দেখা যায়, মৃত্যু হয়েছে তাঁর। প্রথমে মৃত তরুণীর পরিচয় জানা না গেলেও পরে পুলিশ জানতে পারে, তাঁর নাম ডালিয়া। তিনি নরেন্দ্রপুরের নয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা। ওই তরুণীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা কাছে গিয়ে দেখেন, তাঁর শরীরে কোনও সাড় নেই। তড়িঘড়ি তাঁকে বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহটি খতিয়ে দেখে পুলিশ অনুমান করে যে, গলায় ফাঁস দিয়ে তরুণীকে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্ত দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই ঘটনার কিনারা করতে চাইছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে অরুণাভর বয়স ৩৭। তিনি হাওড়ার জগাছা এলাকার বাসিন্দা। অর্জুন দাসের বয়স ৫১। তিনি দত্তপুকুর এলাকার বাসিন্দা।