Vladimir Lenin

লেনিনের মূর্তি ভাঙা হল নকশালবাড়িতে, ত্রিপুরাকে টেনে বিজেপিকে নিশানা বামেদের, পাল্টা গেরুয়া দল

রাতের অন্ধকারে ভেঙে দেওয়া হল লেনিনের মূর্তি। বুধবার এই অভিযোগ উঠেছে সত্তরের দশকের নকশাল আন্দোলনের ধাত্রীভূমি শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির বেঙ্গাইজোত এলাকায়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ ১৩:৩৬
Statue of Vladimir Lenin broken at Naxalbari of Siliguri

ভেঙে দেওয়া হয়েছে লেনিনের মূর্তি। — নিজস্ব চিত্র।

রাতের অন্ধকারে ভেঙে দেওয়া হল লেনিনের মূর্তি। সত্তরের দশকের নকশাল আন্দোলনের ধাত্রীভূমি শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির বেঙ্গাইজোত এলাকায় বুধবার এই অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনার সঙ্গে ত্রিপুরার প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছে সিপিআইএমএল (লিবারেশন) যদিও বিজেপি ওই অভিযোগ পত্রপাঠ উড়িয়ে দিয়েছে। কে বা কারা ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। এ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।

নকশালবাড়ির বেঙ্গাইজোত এলাকায় রয়েছে কার্ল মার্কস, ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস, ভ্লাদিমির লেনিন, জোসেফ স্তালিন, মাও সেতুংয়ের আবক্ষ মূর্তি। বুধবার সকালে দেখা যায় ওই সব মূর্তিগুলির মধ্যে লেনিন মূর্তির মুখের কিছু অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে বাকি মূর্তিগুলি অক্ষত রয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে নকশালবাড়ি থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ওই কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছেন সিপিআইএম‌ (এল)-এর কর্মী-সমর্থকরা। এর আগেও ওই মূর্তিগুলি ভেঙে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ তাঁদের।

Advertisement

নকশাল আন্দোলনের ইতিহাস বলছে, এই বেঙ্গাইজোত গ্রামেই ১৯৬৭ সালের ২৫ মে নকশাল নেতা চারু মজুমদারের নেতৃত্বে জড়ো হয়েছিলেন কৃষকেরা। তাঁদের ছোড়া তিরে মৃত্যু হয় নকশালবাড়ি থানার ইনস্পেকটর তেনজিং ওয়াংদির। এর পর আরও বড় আকারে শুরু হয় আন্দোলন। সেই দিনের ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন সিপিআইএম (এল) নেতা অভিজিৎ মজুমদার। দীর্ঘ দিন বামশাসিত ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার পর লেনিন, মার্কসের মূর্তি ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই প্রসঙ্গ টেনে গেরুয়া শিবিরকেই নিশানা করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দক্ষিণপন্থী শাসকরা লেনিনের মূর্তিকেই নিশানা করছে। ত্রিপুরায় যখন বিজেপি সরকার আসে তখন ওরা লেনিনের মূর্তি ভেঙেছিল। নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি এই অঞ্চলে আরএসএসের একটা প্রভাব রয়েছে। এটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও উদ্দেশ্য আছে। নকশালবাড়ি আন্দোলনের স্মারক স্তম্ভ রয়েছে ওখানে। তারা হয়তো চাইছে না মূর্তিগুলি ওখানে থাকুক। পুলিশ প্রশাসনকে দোষীদের খুঁজে বার করতেই হবে।’’ মূর্তি ভাঙার ঘটনার নিন্দা করেছেন বাম নেতা জীবেশ সরকারও। তবে অভিজিতের মতো সরাসরি বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

অভিজিতের অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক তথা দলের শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আনন্দময় বর্মণ। তিনি বলেন, ‘‘মূর্তি কে ভেঙেছে তা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। তবে বিজেপি কারও দলীয় কার্যালয় বা মূর্তি ভাঙার মতো কাজ করে না। মানুষকে পাশে নিয়ে আমরা উন্নয়নের কাজ করি। নকশাল আন্দোলন নকশালবাড়ি থেকে শুরু হলেও এখন তার আর কোনও অস্তিত্ব নেই। বেঙ্গাইজোতের ওই জায়গায় লোকজনও এখন বেশি যান না। নকশাল আন্দোলনেরও কোনও গুরুত্ব নেই। তবে পুলিশ প্রশাসন দোষীদের খুঁজে বের করুক।’’ কারা দোষী তা খুঁজে বার করতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement