পার্থ চট্টোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার রাতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল। নিম্ন আদালতের নির্দেশ পেয়ে বাইপাসের ধারে আরএন টেগোর হাসপাতালে ভর্তি করানো হল তাঁকে। সেখানে চিকিৎসার খরচ বহন করতে হবে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থকেই। মঙ্গলবার তেমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারভবনের বিচারক।
গত ২০ জানুয়ারি জেলে অসুস্থ হয়ে পড়ায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থকে। সোমবারই আদালতে পিটিশন জমা করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আবেদনে পার্থ জানিয়েছিলেন যে, এসএসকেএমে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হতে পারছেন না তিনি। তাই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক তাঁকে। এর পরেই এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট তলব করে পার্থের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল আদালত। মঙ্গলবার সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়েছেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। সেখানে জানানো হয়েছে, পার্থের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে। সংক্রমণের সমস্যাও রয়েছে। তার পরেই বিচারক নির্দেশ দেন যে, বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন পার্থ। তবে চিকিৎসার খরচ তাঁকেই দিতে হবে। সেই মতো মঙ্গলবার রাতে এসএসকেএম থেকে বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল তাঁকে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত পার্থ গত আড়াই বছর ধরে জেলে। ২০২২ সালের ২২ জুলাই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইডির পরে সিবিআইয়ের হাতেও গ্রেফতার হন পার্থ। যে দিন গ্রেফতার হন, সে দিনই পার্থকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি কেন এসএসকেএমে ভর্তি হতে চাইছেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ইডি। হাই কোর্টের বিচারপতিও এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী পার্থের আইনজীবীকে বলেছিলেন, ‘‘এসএসকেএম প্রতিটি প্রভাবশালীর জন্য নিরাপদ জায়গা।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি নাম করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে ভুবনেশ্বরের এমসে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে। সেখানেই তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করায় ইডি। এর পরে জেলে বেশ কয়েক বার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পার্থ। হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের আবেদনও তিনি করেছেন আদালতে। জেল হাসপাতাল থেকে গত সোমবার পার্থকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। এ বার সেখান থেকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হল তাঁকে।