জাল ওষুধ ও স্যালাইন ব্যবহারের বিরুদ্ধে ড্রাগ কন্ট্রোল দফতরে বিক্ষোভে সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠন এবং বস্তি উন্নয়ন সমিতি। —নিজস্ব চিত্র।
স্যালাইন-কাণ্ড এবং জাল ওষুধ কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামল সিপিএমের একাধিক গণ-সংগঠন। জাল ওষুধের সরবরাহ বন্ধ না-হলে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দফতরের সামনে আরও বড় বিক্ষোভ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।
জাল ওষুধের জেরে রোগীর প্রাণহানি ও হয়রানির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ‘ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশনে’র দফতরের সামনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠন এবং পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি। নিজ়াম প্যালেসে ওই দফতরের সামনে বিক্ষোভে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতোই। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, জাল ওযুধ নির্মাতা ও সরবরাহকরীদের আড়াল করে দায় চাপানো হচ্ছে চিকিৎসকদের ঘাড়ে। দাবি তোলা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই স্বাস্থ্যমন্ত্রী) পদত্যাগেরও।
মীনাক্ষী-সহ একটি প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল। অভিযোগ জানিয়ে বেরিয়ে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী বলেছেন, ‘‘ড্রাগ কন্ট্রোলের কাছে অভিযোগ আসছে। তাও জাল ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করছে না। রাজ্য সরকার এই স্যালাইন সরবরাহ করতে দিয়েছে। গরিব মানুষ যান সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য, তাঁদের শরীরে যে বিষাক্ত স্যালাইন চলে যাচ্ছে, তার দায় কে নেবে?’’ মেটিয়াবুরুজে কয়েক জন দর্জি জাল ওষুধ ও সাল্যাইনের জন্য দৃষ্টিশক্তি খুইয়েছেন বলে অভিযোগ করে মীনাক্ষীর আরও বক্তব্য, ‘‘যারা জাল ওষুধ বানাচ্ছে আর যারা তার অনুমোদন দিচ্ছে, তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। এর পরে রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল দফতরেও অভিযান হবে।’’
প্রতিবাদ-বিক্ষোভে এ দিন ছিলেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্য্যী, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ ও রাজ্য সভানেত্রী জাহানারা খান, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, কলতান দাশগুপ্ত, বস্তি উন্নয়ন সমিতির সুখরঞ্জন দে প্রমুখ। ড্রাগ কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করার প্রতিনিধিদলে ছিলেন পিপলস রিলিফ কমিটির সম্পাদক, চিকিৎসক ফুয়াদ হালিমও। তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্যে বিষাক্ত স্যালাইন তৈরি করার সংস্থা বাড়ছে কেন, সেটা এখানে এসে জানা গেল। ব্যাঙের ছাতার মতো ভুয়ো সংস্থা বাড়ছে আর বরাত পাচ্ছে। এই ড্রাগ কন্ট্রোল কোনও নোটিস, রিপোর্ট মানুষের সামনে আনে না। ড্রাগ কন্ট্রোল বলছে যে, তারা রাজ্য সরকারকে ভুয়ো সংস্থার বিষয়ে জানিয়েছে। প্রসূতি মৃত্যু নিয়ে রাজ্য সরকার সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলে কোনও রিপোর্ট দেয়নি এখনও।’’ ড্রাগ কন্ট্রোলে পর্যাপ্ত কর্মী না থাকা নিয়েও সরব হয়েছেন তাঁরা।