প্রসূতি মৃত্যুকাণ্ডে অভিযুক্ত চিকিৎসক পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়কে রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
স্যালাইন বিতর্কে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়কে রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, আপাতত ওই নিলম্বিত (সাসপেন্ডেড) চিকিৎসককে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। তবে তদন্ত চলবে। তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে প্রসূতি মৃত্যু-কাণ্ডে অভিযুক্ত পল্লবীকে। অন্য দিকে, এখনই সিআইডি তদন্তে হস্তক্ষেপ নিয়ে আবেদন গ্রহণ করেনি আদালত। বিচারপতি ঘোষ জানান, এই সংক্রান্ত জোড়া জনস্বার্থ মামলা শুনছে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এমতাবস্থায় মামলাকারীর আবেদন সিঙ্গল বেঞ্চের শোনার এক্তিয়ার রয়েছে কি না, তার ব্যাখ্যা প্রয়োজন। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ থেকে ছাড়পত্র পেলেই পল্লবীর আবেদন শুনবে আদালত।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় পল্লবী-সহ ১৩ জনকে সাসপেন্ড করে স্বাস্থ্য ভবন। স্বাস্থ্য ভবনের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন চিকিৎসক পল্লবী। তাঁর আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের সওয়াল, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় স্যালাইন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ওই ঘটনায় সিআইডি তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু তারা স্যালাইন নিয়ে তদন্ত না করে ইচ্ছাকৃত ভাবে ডাক্তারদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। স্যালাইন বিতর্ক চাপা দিতেই অন্যের উপর দায় চাপানো হচ্ছে।
জানুয়ারির শুরুতে মেদিনীপুর হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাঁচ প্রসূতি। পরে এক জনের মৃত্যু হয়। এক সদ্যোজাতেরও মৃত্যু হয়। এর পরেই স্যালাইনের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই ঘটনার পরে ওই হাসপাতালের ১৩ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তার পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন পল্লবী। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে ডাকা হয়েছে। অথচ এখনও পর্যন্ত পুলিশ এফআইআরের কপি আপলোড করেনি। কেন মামলাকারীকে এফআইআরের কপি দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। বিচারপতি ঘোষ জানিয়েছিলেন, সোমবারের মধ্যে পল্লবীকে এফআইআর কপি দিতে হবে। অভিযুক্ত পল্লবীর মামলার কেস ডায়েরিও রাজ্যের থেকে তলব করে হাই কোর্ট। এ বার বিচারপতির নির্দেশ, ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে তদন্ত চলবে। সিআইডির তদন্তে হস্তক্ষেপ নিয়ে আবেদন গ্রহণ করেনি হাই কোর্ট।