সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে নতুন করে এফআইআর দায়ের করল পুলিশ। সন্দেশখালি থানায় এফআইআরটি দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গৌর দাস নামের এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে এই এফআইআর হয়েছে।
নতুন এফআইআরে শাহজাহানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। তিনি ৮০ হাজার টাকা লুট করেছেন বলে দাবি অভিযোগকারীর। এ ছাড়া, ঘরবাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও রয়েছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বসিরহাট জেলা পুলিশ।
উল্লেখ্য, সোমবারই কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারবে রাজ্য পুলিশ। তাতে কোনও বাধা নেই। আদালত তেমন কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হচ্ছিল, আদালতের নির্দেশের কারণেই শাহজাহানকে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছে না। শাসকদলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গত বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘‘শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। ইডি তাঁকে ধরতে পারেনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গিয়ে রাজ্য পুলিশের ওই এফআইআরের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেয়েছে। ফলে পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে আদালতই।’’
সোমবার হাই কোর্টে সেই প্রসঙ্গে উঠলে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম স্পষ্ট করে জানান, ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। শাহজাহানকে গ্রেফতার করার বিষয়ে কোনও স্থগিতাদেশ আদালত দেয়নি। পুলিশ চাইলেই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে। শাহজাহানকে এই মামলায় যুক্ত করে নোটিস দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। এর পরেই জানা গেল সন্দেশখালি থানায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে নতুন এফআইআর দায়ের হয়েছে। শিবু হাজরা, উত্তম সর্দার-সহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে ওই এফআইআর হয়েছে।
উল্লেখ্য, রেশন ‘দুর্নীতি’মামলায় শাহজাহানের নাম জড়িয়েছিল। ইডি তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে যায়। সেখান থেকে মার খেয়ে ফিরতে হয়েছিল ইডির আধিকারিকদের। সেই থেকে তৃণমূলের এই নেতা ‘নিখোঁজ’। ইডি দফতরে তিনি পর পর হাজিরা এড়িয়েছেন। আদালতে তাঁর আগাম জামিনের মামলার শুনানি চলছে। এই পরিস্থিতিতে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের গ্রেফতারি চেয়ে পথে নেমেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। প্রায় প্রতি দিনই চলছে বিক্ষোভ। নতুন এফআইআর এবং আদালতের নির্দেশের পর এ বার শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যায় কি না, সেটাই দেখার।