নবান্নের পথে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন ঘিরে অশান্তিতে যখন উত্তপ্ত ভাঙড়, তখন বুধবার আচমকাই নবান্নে গেলেন সেখানকার আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। দুপুর ৩টে নাগাদ তাঁকে নবান্নে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। নওশাদ একাই ছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি।
নবান্ন থেকে বেরিয়ে নওশাদ জানান, ভাঙড়ে পঞ্চায়েত ভোট পূর্ববর্তী পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি। আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে তাঁর আগমনের কথা ইমেল মারফত জানিয়েওছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত ছিলেন।
পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই ভাঙড়ে অশান্তির সূত্রপাত। প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে এই এলাকায়। আইএসএফ এবং শাসকদল তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। পুলিশ বাধা দিলে তাদের সঙ্গেও বচসা হয় শাসক এবং বিরোধী দলের কর্মীদের। পর পর তিন দিন ভাঙড়ের পরিস্থিতি উত্তপ্ত।
নওশাদ জানান, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের অভিভাবিকা। জনপ্রতিনিধি হিসাবে ভাঙড়ের সমস্যার দিকে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তাই নবান্নে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ভাঙড়ের বিডিও অফিস ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও ঘিরে রাখা হয়েছে। বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারছে না। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আমাদের রাজ্যের অভিভাবিকা। তাই আমার মনে হয়েছে, ওঁকে জানানো উচিত। তাই জানাতে এসেছিলাম। তার আগে দেখা করব জানিয়ে মেলও করেছিলাম। কিন্তু আমার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সময় হয়ে ওঠেনি। আজ আবেদন জানিয়ে গেলে হয়তো আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দেখা করতে পারব। কিন্তু আগামিকালই মনোনয়ন জমা দেওয়া শেষ হয়ে যাবে। পরে কখনও প্রয়োজন হলে আবার আসব।’’
ভাঙড়ের বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘আমি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। যাতে তাঁর নজর আলাদা করে ভাঙড়ের দিকে থাকে। আমি জনপ্রতিনিধি। সাধারণ মানুষ ভাঙড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁরা যে দলেরই হন না কেন। আমি মানুষের জন্য ছুটে এসেছি। ভাঙড়ে যিনি তৃণমূল করেন আমি তাঁরও জনপ্রতিনিধি, যিনি বিজেপি করেন তাঁরও জনপ্রতিনিধি, যিনি আইএসএফ বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, আমি প্রত্যেকের জনপ্রতিনিধি। সকলে যাতে সুরক্ষিত থাকেন, নিরাপদে যাতে সকলে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন, যাতে নির্বিঘ্নে ভোট হয়, তা নিশ্চিত করতে আমি এখানে এসেছিলাম। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সেই কমিশন পুলিশের উপর আস্থা রাখছে এবং পুলিশের শীর্ষে আছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁর কাছে আমি এ সব জানাতে এসেছিলাম।’’