নিজস্ব চিত্র
আত্মীয় বন্ধুরা বলেছিলেন, ‘‘এমন কোনও একটা নাম দাও, যাতে লোকের নজরে পড়ে।’’ সেই কথা শুনেই চাকদহের সোমনাথ ও রত্না সাহা দোকানের নাম দিয়েছিলেন ‘ডাক্তারের সুপার ঘুগনি’। শুধু চাকদহ নয়, ‘সুপার’ লুপ্ত হয়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এখন মানুষের মুখে মুখে ফেরে ‘ডাক্তারের ঘুগনি’-র কথা। ১২ টাকায় তিনটে রুটি, ছোলার ডাল বা আলুর দম অথবা ঘুগনি, সকাল সকাল দোকান খুলেই এই পসরা নিয়ে বসেন সোমনাথ ও রত্না। তারপর সারাদিনে খাবারের টানে এখানে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ।
বিভূতিভূষণের ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ ছিল রানাঘাটে। সেই জেলাতেই স্বপ্নের দোকান গড়েছেন সোমনাথরা। হাজারি ঠাকুরের হোটেলের রুটিন যেমন ছিল, এও ঠিক তেমন। সেই চেনা রুটিন। সকাল থেকে দুপুর, ফের বিকেল থেকে রাত খোলা হোটেল। বনগ্রাম রোডে অবস্থিত এই দোকানের মালিক সোমনাথ বললেন, ‘‘এখন তো লোকাল ট্রেন চলছে না, তাই ব্যবসা অর্ধেক হয়েছে’’। হাজারির কালের মতোই খাবারের ব্যবসায় এখনও ভরসা সেই লোকাল ট্রেনের যাত্রীরাই, কথায় কথায় তা মনে করিয়ে দিলেন সোমনাথ।
হাজারি ঠাকুরের আদর্শ ছিল ভাল খাবার কম দামে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সোমনাথদেরও লক্ষ্য তাই। সেই কারণেই খাবারের দাম রয়েছে নাগালের মধ্যে। শুধু তাই নয়, সোমনাথ বললেন, ‘‘নাম নিয়ে আলোচনা হয় ঠিকই, কিন্তু পরে বুঝতে পেরেছি, মানুষের কাছে খাবারের মানই একমাত্র বিবেচ্য। তাই আমাদের ঘুগনির মান সবসময় ঠিক রাখতে হয়। পাশাপাশি, ঘুগনির সঙ্গে দেওয়া হয় সস, চাটনি। অনেক রকম চাটনি আছে, সবই মেলে ঘুগনির সঙ্গে। সাধারণ মানুষ সেই কারণেই হয়তো আসেন আমাদের কাছে।’’