Nandigram

৩০ দিনে ২ তৃণমূল কর্মী খুন! নন্দীগ্রামে আইসি বদল, ফের দায়িত্বে তুহিন, শুভেন্দুর কেন্দ্রে চর্চা

নন্দীগ্রাম থানার দায়িত্ব থেকে অনুপম মণ্ডলকে সরিয়ে দেওয়া হল ডিআইবিতে। ওই জায়গায় আনা হয়েছে তুহিন বিশ্বাসকে। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার নানা পদে নন্দীগ্রাম থানায় কর্মরত ছিলেন তুহিন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৩৯
IC of Nandigram

আবার নন্দীগ্রাম থানার দায়িত্বে তুহিন বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।

মাত্র এক মাসের ব্যবধানে নন্দীগ্রামে খুন হয়েছেন দুই তৃণমূল কর্মী। পদ্মশিবিরের ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে রাজনৈতিক চাপানউতর অব্যাহত। এই আবহে নন্দীগ্রাম থানার আইসি বদলি করল নবান্ন। নন্দীগ্রাম থানার দায়িত্ব থেকে অনুপম মণ্ডলকে সরিয়ে দেওয়া হল ডিআইবিতে। ওই জায়গায় আনা হয়েছে তুহিন বিশ্বাসকে। যদিও তুহিন পদমর্যাদায় ডিএসপি র‌্যাঙ্কের আধিকারিক। বস্তুত, গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার নানা পদে নন্দীগ্রাম থানায় কর্মরত ছিলেন তিনি। এই বদলি নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা তৈরি হলেও জেলা পুলিশ একে রুটিন বদলি বলছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামের সাতেঙ্গাবাড়ি এলাকায় তৃণমূল কর্মী মহাদেব বিষয়ী খুন হন। স্থানীয় সূত্রের খবর, সকালে সাতেঙ্গাবাড়িতে মাংস দোকানে কাজ করছিলেন মহাদেব। সেখান থেকে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। গোকুলনগরের দক্ষিণ বৃন্দাবনচকের বাসিন্দা মহাদেবের মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ওই ঘটনার পর এলাকার অন্তত ৩৫ জন বিজেপি নেতা এবং কর্মীর বিরুদ্ধে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে থানায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় মহাদেবের দেহ ময়নাতদন্তের পরে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল কর্মীরা মিছিল করে দেহ নিয়ে মহাদেবের গ্রামের বাড়িতে যান। শুক্রবরাই মৃতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনরা। তিনি নন্দীগ্রামের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, দিন পনের আগেও মহাদেবকে এক বার মারধর করা হয়েছিল। সে নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি তারা। তৃণমূলের নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘‘মহাদেবকে পিটিয়ে খুন করেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এর আগে বিষ্ণুপদকে খুনের ঘটনাতেও বিজেপির লোকেরা জড়িত ছিল। এলাকার বিজেপি নেতাদের মদতেই হামলা এবং খুন সংঘটিত হচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে তৃণমূলকে দমানো যাবে না।’’

গত ৮ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কালীচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নম্বর জলপাই গ্রামে বাড়িতে ঢুকে তৃণমূলের বুথ সভাপতি গুরুপদ এবং তাঁর ভাই বিষ্ণুপদ মণ্ডলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বিষ্ণুপদকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ওই ঘটনায় নাম জড়ানোর পর বিজেপি কর্মীরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের অভিযোগ, একই ঘটনায় দু’টি এফআইআর করেছে পুলিশ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে। বিজেপির দাবি, এই দু’টি ঘটনাতেই তাদের কেউই জড়িত নয়। বৃহস্পতিবার সাতেঙ্গাবাড়ি এলাকায় গিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাতেঙ্গাবাড়িতে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হল, তাঁর পরিবারের দাবি কী তা স্পষ্ট করে জানব। এ বিষয়ে আমি কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করব না।’’ এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে আইসি বদল নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন