মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপারের ঘর থেকে বার হচ্ছে সিআইডি দল। —নিজস্ব চিত্র।
প্রসূতি মৃত্যু, নিম্নমানের স্যালাইন ব্যবহারের অভিযোগের তদন্তে এ বার মেদিনীপুর মেডিক্যালের দুই জুনিয়র ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেন সিআইডি আধিকারিকেরা। জুনিয়র ডাক্তারদের পাশাপাশি চার জন নার্সের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। সূত্রের খবর, মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার জয়ন্ত রাউতকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একটি তদন্তকারী কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্টও জমা দিয়েছে। তার পরই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, এই ঘটনায় আরও তদন্তের প্রয়োজন। স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি সিআইডিও এই ঘটনার তদন্ত করবে। সেই নির্দেশের পর মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ সিআইডির দল মেদিনীপুর মেডিক্যালে পৌঁছয়।
সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি দল মেদিনীপুর মেডিক্যালে যায়। সুপারের ঘরেই চলে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। জুনিয়র ডাক্তার, নার্স ছাড়াও দু’জন সিনিয়র চিকিৎসককের সঙ্গে কথা বলেন সিআইডি আধিকারিকেরা। জানা গিয়েছে, গত বুধবার দায়িত্বে থাকা স্ত্রীরোগ বিভাগের দুই সিনিয়র চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুপুর থেকে জিজ্ঞাসাবাদ চলে। ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল? কী কারণে প্রসূতিরা অসুস্থ হয়ে পড়েন, তার পর এক জনের মৃত্যু হয়? তা বিশদে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। স্ত্রীরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে মহম্মদ আলাউদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে খবর। এই প্রসঙ্গে জয়ন্ত বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। সিআইডি দল এসেছে। তারা যাঁদের যাঁদের ডেকে পাঠিয়েছিল, তাঁরা সকলেই এসেছিলেন।’’ জানা গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের পর সিআইডি দলের সদস্যেরা বেশ কিছু নথি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছেন। হাসপাতালের রোস্টার, লকবুক, রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (আরএল)-এর ব্যাচ নম্বর খতিয়ে দেখা হয় বলেও খবর।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে শুক্রবার এক প্রসূতির মৃত্যুর পরেই তাঁকে দেওয়া আরএল স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তকারী দলের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘নিয়ম হল অস্ত্রোপচার হলে সিনিয়র ডাক্তারের অধীনে জুনিয়র ডাক্তারেরা কাজ করবেন। কিন্তু প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে আমরা যা পেয়েছি, তাতে মেদিনীপুরে মেডিক্যাল কলেজে সেই প্রক্রিয়া মানা হয়নি। তবে আরও তদন্ত দরকার। তা চলছে।’’ স্বাস্থ্য ভবনের তদন্তকারী কমিটিকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি, সিআইডিও এই ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে রাজ্যকে। মুখ্যসচিব জানান, বিস্তারিত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।