মেদিনীপুর মেডিক্যালে সিআইডির দল। —নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ, নিম্নমানের স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল প্রসূতিদের। সেই ঘটনার তদন্তে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সিআইডির দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল হাসপাতালে পৌঁছয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন সিআইডি আধিকারিকেরা।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একটি তদন্তকারী কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্টও জমা দিয়েছে। তার পরই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, এই ঘটনায় আরও তদন্তের প্রয়োজন। স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি সিআইডিও এই ঘটনার তদন্ত করবে। তাদের দেওয়া রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর মেডিক্যালে যান সিআইডি আধিকারিকেরা। জানা গিয়েছে, খড়্গপুর থেকে প্রতিনিধিদলটি হাসপাতালে যায়। সিআইডি-র আরও একটি দল তদন্ত করতে হাসপাতাল যাবে। ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিকের নেতৃত্বে সেই দল তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে কলকাতা থেকে এক আধিকারিক খড়্গপুর পৌঁছছেন। সিআইডির দল প্রথমেই মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী এবং সুপার জয়ন্ত রাউতের সঙ্গে কথা বলবে। খতিয়ে দেখবে যাবতীয় প্রয়োজনীয় নথি।
অন্য দিকে, তদন্তভার সিআইডির হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মৃত প্রসূতি মামণি রুইদাসের স্বামী দেবাশিস। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো জানি না। শুনেছি, রাজ্য সরকার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সিআইডি যেন ভাল ভাবে তদন্ত করে। কী ভাবে মৃত্যু হল মামণির, আমরাও তা জানতে চাই। সুস্থ ভাবে বাড়ি থেকে এসেছিল। ডাক্তারদের ভুল না স্যালাইনের ভুল? এই সত্যটা আমরাও জানতে চাই।’’ এ প্রসঙ্গে দেবাশিসের দিদি রুম্পা দাস বলেন, ‘‘সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সত্যিটা উঠে আসুক। আমরা চাই দোষীরা কঠোর শাস্তি পাক। আর যেন কোনও সন্তানকে জন্মের পরই মাকে হারাতে না হয়।’’
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে শুক্রবার এক প্রসূতির মৃত্যুর পরেই তাঁকে দেওয়া রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (আরএল) স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পরেই স্বাস্থ্য দফতর কড়া নির্দেশিকা জারি করে। যে সংস্থার উৎপাদিত স্যালাইন ঘিরে বিতর্ক, তাদের উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। গত ৭ তারিখ থেকে ওই সংস্থা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মেডিক্যাল কলেজে ঠিক কী ঘটেছিল, কার গাফিলতিতে এক প্রসূতির মৃত্যু হল, আদৌ আরএল স্যালাইনের ব্যবহারই এর জন্য দায়ী কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।