আগামী ২৮ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। যাঁদের বিরুদ্ধে সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের হলফনামা দিতে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
যাঁদের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক ভাবে সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের ১১ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পর, দু’সপ্তাহের মধ্যে পাল্টা হলফনামা দিতে হবে মামলাকারীকে। আগামী ২৮ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে, এই অভিযোগে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন অরিজিৎ মজুমদার নামে এক ব্যক্তি। তাঁর আইনজীবী বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের একাংশ বিভিন্ন সময় যে সরকারি হলফনামা পেশ করেছেন, তাতে সম্পত্তি বৃদ্ধির বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বলে মামলাকারীর অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে মামলাকারীর তরফে কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর ভাই সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী। কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে কাজরী তাঁর দেওয়া হলফনামায় অনেক তথ্য দেননি বলে অভিযোগ মামলাকারীর। এ ক্ষেত্রে মামলাকারীর তরফে দু’টি সংস্থার নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এমন অনেক সংস্থায় ওই দম্পতির নাম নথিভুক্ত থাকলেও নির্বাচনী হলফনামায় সেগুলোর কোনও উল্লেখ করা হয়নি। কাজরী হলফনামায় দাবি করেছিলেন, তিনি এবং তাঁর স্বামী সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত। তা সত্ত্বেও তাঁদের এত বিপুল পরিমাণ আয়ের উৎস কী তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে মামলাকারীর তরফে। তাঁরা তাঁদের ছেলের সম্পত্তির কোনও খতিয়ান পেশ করেননি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে, সম্প্রতি ধর্মতলার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘শুনলাম, বিজেপি আমার নামে মামলা করেছে। আমি তো গত ১২ বছর ধরে এমপি হিসেবে যে পেনশন পাই, তা-ও নিই না। সাংসদ হওয়ার পরও কোনও দিন বিজনেস ক্লাসে যাত্রা করিনি। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আমার যে প্রাপ্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা, তা-ও নিই না। আমি যেখানে থাকি, সেটাও ঠিকায় ভাড়া। আমার নিজের বলতে কিছুই নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ভাই-বোনেরা সবাই আলাদা আলাদা থাকি। যে যার পরিবার নিয়ে। কখনও-সখনও দেখা হয়। উৎসবের মরসুমের সময় আমাদের যোগাযোগ হয়। রাখিবন্ধনের সময়। কালীপুজোর সময়।’’