গত ৭ নভেম্বর ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক দীপ্র ভট্টাচার্য আত্মঘাতী হয়েছিলেন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক দীপ্র ভট্টাচার্যের মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকারের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় যখন আন্দোলন চলছে, সেই সময়ে গত ৭ নভেম্বর ঝাড়গ্রামের রঘুনাথপুরে একটি লজের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ওই চিকিৎসকের দেহ। তার পাশে একটি সিরিঞ্জও পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ জানতে পারে, মৃত্যুর আগে স্ত্রীকে মেসেজও পাঠিয়েছিলেন দীপ্র। সেই ঘটনায় ‘থ্রেট কালচার’ বা হুমকি সংস্কৃতির অভিযোগ তুলেছিলেন অনেকে, যা নিয়ে পরবর্তী কালে হাই কোর্টে মামলা হয়। বৃহস্পতিবার সেই মামলারই শুনানি ছিল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। আদালত জানিয়েছে, রাজ্যকে এ বিষয়ে মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
দীপ্রের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশ দাবি করছিল, এই ঘটনার সঙ্গে খুনের যোগ নেই বলে মনে হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, সিরিঞ্জের মাধ্যমে নিজের শরীরে নিজেই ওষুধ প্রয়োগ করে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই চিকিৎসক। তাঁর দেহে প্রতিরোধের কোনও চিহ্নও পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে এই আত্মহত্যা বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। মৃতের বাবাও কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। ফলে ‘থ্রেট কালচার’-এর সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। আদালত জানিয়েছে, এই সংক্রান্ত ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হবে। তা দেখে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। আপাতত দু’সপ্তাহের জন্য মামলাটি স্থগিত রেখেছেন বিচারপতিরা।
ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় ‘থ্রেট কালচার’ বন্ধ করতে চেয়ে হাই কোর্টে মামলাটি করেছিলেন বিজয়কুমার সিঙ্ঘল। মামলাকারীর আইনজীবীকে আদালত ভর্ৎসনা করেছে। এ ক্ষেত্রে আদালতের পর্যবেক্ষণ, মৃতের পরিবারের তরফে কেউ মামলা করেননি। তাঁরা কেউ আদালতের দ্বারস্থ হননি। মৃতের পরিবারের গোপনীয়তার বিষয়টি তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, মন্তব্য করেছে আদালত। পরিবারের তাগিদ না থাকলেও কেন এই মামলা করা হয়েছে, তা নিয়ে বিচারপতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে আরজি করের ঘটনার উদাহরণও টানা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, আরজি করে নির্যাতিতার পরিবারই বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। ফলে তার সঙ্গে এই ঘটনার সম্পর্ক নেই।