Mamat Banerjee

তৃণমূলের বিকল্প আরও উন্নত তৃণমূল, ভোটের মুখে নয়া স্লোগান মমতার

সিএএ, এনআরসি কিছুতেই মেনে নেবেন না বলেও এ দিন কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম থেকে হুঙ্কার ছাড়েন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:৫৭
গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভা ভোটের মুখে নতুন স্লোগান তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— ‘আরও উন্নত তৃণমূল’। বিজেপি-কে তীব্র ভাষায় আক্রমণের পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী বৃহস্পতিবার আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিকল্প হবে তৃণমূলই।’’ কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্মেলনে যোগ দিয়ে মমতার হুঙ্কার, এনআরসি-সিএএ কোনওমতেই করতে দেবেন না তিনি!

বিগত লোকসভা ভোটের ফলের সাফল্যে ভর করে আসন্ন বিধানসভা ভোটে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল নেতারা বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। ১০ বছরের শাসনের পর তৃণমূল খানিক ‘কঠিন’ ভোটেই অবতীর্ণ হচ্ছে। এই পরিস্থতিতেই নয়া স্লোগান তুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। বললেন, ‘‘তৃণমূলের বিকল্প মা-মাটি-মানুষ। অন্য কেউ নয়। তৃণমূল আরও উন্নততর তৃণমূলের দিকে যাবে। আরও উন্নয়নের দিকে যাবে।’’

Advertisement

ঘটনাচক্রে, এক সময় বামফ্রন্টও একই স্লোগান তুলেছিল। জ্যোতি বসু রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এর পর ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটে বুদ্ধদেবের স্লোগান ছিল, ‘‘বামফ্রন্টের বিকল্প উন্নততর বামফ্রন্ট।’’ সেই বছর নির্বাচনে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের চেয়েও ভাল ফল করেছিল বামেরা। অনেকটা যেন সেই ধাঁচেরই স্লোগানই এ বার শোনা গেল মমতার মুখে।

কসবার কর্মসূচি থেকে বিজেপি-কে একের পর এক রাজনৈতিক আক্রমণ করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা চায় দাঙ্গা। আমরা চাই শান্তি। ওরা চায় যুদ্ধ। আমরা চাই শান্তি। ওরা চায় বিসর্জন। আমরা চাই আপনজন। ওরা চায় কর্ম সংকোচন। আমরা চাই কর্মসংস্থান। জনগণ বিজেপি থেকে সাবধান।’’

সম্প্রতি তিন মাসের জন্য সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন স্থগিত রাখার কথা বলেছে কেন্দ্র। কিন্তু মমতার দাবি, আইন প্রত্যাহার করতে হবে। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘‘সিএএ আইন এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। যে কোনও সময় সেটা কাজে লাগাতে পারে। কিন্তু আমরা এনআরসি, সিএএ করতে দেব না।’’ এই প্রসঙ্গেই বিজেপি-কে নিশানা করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘‘অসমে গিয়ে দেখে আসুন এনআরসি-র নামে কত জনকে হত্যা করেছে! মানুষকে কী ভাবে জেলে আটকে রেখেছে। ত্রিপুরায় দেখুন, ১০ হাজার শিক্ষককে স্থায়ী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু স্থায়ীকরণ দূরে থাক, চাকরিই কেড়ে নিয়েছে। আমাদের বাংলা এখানে অনেক শান্তিতে আছে। আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। এনআরসি, সিএএ কিছুতেই মানব না।’’

বৃহস্পতিবার মমতার সভার শুরুতে কিছুটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তার জেরে বক্তব্য শুরু করেও খানিক্ষণের জন্য থামতে হয় মমতাকে। তিনি কথা বলতে শুরু করার পরেই দর্শকাসন থেকে কয়েক জন উঠে দাঁড়িয়ে কিছু বলার চেষ্টা করেন। তাতেই রুষ্ট হন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণও করতে বলেন। বলেন, ‘‘পুলিশকে বলছি, ব্যাপারটা দেখুন! এখানে তো একটা নিরাপত্তার ব্যাপারও আছে। যে সে চলে আসছে!’’ মমতা বক্তৃতাও থামিয়ে দেন। তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই দর্শকদের শান্ত হতে বলেন। অভিষেক বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রীর বক্তব্যের পর স্বেচ্ছাসেবকরা গিয়ে আপনাদের বক্তব্য শুনবেন।’’ তাতে পরিস্থিতি শান্ত হয়েও যায়। মিনিট দশেক পর ফের বলতে শুরু করেন মমতা। তখন তিনিও অনেকটাই শান্ত। বলেন, ‘‘আমরা একটু মাথা গরম। তা বলে আপনারা কেন মাথা গরম করবেন!’’

Advertisement
আরও পড়ুন