ট্যাংরায় হেলে পড়া সেই বহুতল (বাঁ দিকে সাদা রঙের)। নিজস্ব চিত্র।
বাঘাযতীনের পর ট্যাংরায় হেলে পড়ল একটি বহুতল। বুধবার সকালে বাড়িটি হেলে পড়ে। তার জেরে আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা। কলকাতা পুরসভার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে ট্যাংরা এলাকার ক্রিস্টোফার রোডের একটি নির্মীয়মাণ বহুতল হেলে পড়েছে পাশের একটি বাড়ির উপর। যে হেতু বাড়িটি নির্মীয়মাণ, তাই সেখানে কেউ বসবাস করতেন না। তবে রাজমিস্ত্রিরা থাকতেন। তবে তাঁরা অক্ষত বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত বছর এই ঝাঁ-চকচকে বহুতলটির নির্মাণকাজ শুরু করেছিল প্রোমোটিং সংস্থা। অল্প দিনেই পাঁচতলার এই বহুতল আবাসনটি প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নির্মাণকাজ চলাকালীনই তা হেলে পড়ায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণের ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার কোনও শর্তেই মানা হয়নি। পাশের বাড়িগুলির সঙ্গে যে ন্যূনতম দূরত্ব রেখে নির্মাণকাজ করতে হয় সেই বিষয়টিও মানা হয়নি। অন্য দিকে, শহরে আরও একটি বাড়ি হেলে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কাজকর্ম নিয়েও। ওই এলাকার মাটি পরীক্ষা না করে কী ভাবে বহুতলটি নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্রিস্টোফার রোডের বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, কলকাতায় যে কোনও ধরনের বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে মাটি পরীক্ষা করা আবশ্যক। সংশ্লিষ্ট এলাকার মাটি কতটা শক্ত বা কত তলা আবাসনের ভার বহন করতে পারবে, সেই বিষয়টিও দেখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, এই নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানা হয়নি।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, সোমবার এই বাড়িটি হেলে যাওয়ার খবর পান কর্তৃপক্ষ। দ্রুতই সেই বাড়িটির বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারদের। মঙ্গলবার সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘সোমবার খবর পাওয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল। যে রিপোর্ট কলকাতা পুরসভার হাতে এসেছে তাতেও উদ্বেগের কিছু ধরা পড়েনি। তবে নজর রাখছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা।’’
অন্য দিকে, এই ঘটনার সঙ্গে বাঘাযতীনের হেলে পড়া বাড়িটির সাদৃশ্য খোঁজা উচিত নয় বলে মনে করছে কলকাতা পুরসভার একাংশ। বাঘাযতীনে কলকাতা পৌরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি হেলে পড়ার পরেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পরিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারের ঘটনাটি ঘটেছে আরও এক মেয়র পরিষদ সন্দীপন সাহার ওয়ার্ডে। তবে বড়সড় বিপদ না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে কলকাতা পুরসভা। উল্লেখ্য, গত বছর মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দর এলাকায় নির্মীয়মাণ বেআইনি বহুতল ভেঙে ১৩ জনের মৃত্যু হয়।