যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে না বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর প্রতিনিধি দল। এমনটাই জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত। তিনি জানিয়েছেন, রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর কাছ থেকে ইউজিসির বক্তব্য তিনি জানতে পেরেছেন।
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং সংক্রান্ত নির্দেশাবলি মানা হচ্ছে কি না, কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ করেছে, তা আগেই জানতে চেয়েছিল ইউজিসি। বুধবার তাদের প্রতিনিধি দলের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। তবে তার আগে রবিবারই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইউজিসিকে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিলেন, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় চার দিনে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। তার পরেই ইউজিসি থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার তাঁরা যাদবপুরে আসছেন না। রেজিস্ট্রারের দাবি, ইউজিসি তাদের রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সংক্রান্ত তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে দফায় দফায় ইউজিসিকে রিপোর্ট দেবে। নিয়মিত তদন্তের খোঁজ নেওয়া হবে ইউজিসির তরফেও।
রবিবারের রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবারের ঘটনার পরেই ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর চিকিৎসারও বন্দোবস্ত করেন কর্তৃপক্ষ। এর পর তাঁরা পুলিশে এফআইআর দায়ের করেন। কী ভাবে ওই ছাত্র হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গেলেন, তা জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় আরও জানিয়েছে, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর হস্টেল থেকে নতুন ছাত্রদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের রাখা হয়েছে নতুন একটি হস্টেলে। ছাত্রেরা যাতে আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন, তার জন্য তাঁদের সঙ্গে আলাদা করে কথাও বলেছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রত্যেক বিভাগের প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া নতুন ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক জন করে পরামর্শদাতা (মেন্টর) নিয়োগ করা হয়। ছাত্রছাত্রীদের যে কোনও রকম সমস্যার বিষয় ওই মেন্টরকেই জানানোর কথা। সেই মেন্টরদের নামের তালিকাও ইউজিসিকে পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। নদিয়া থেকে যাদবপুরে বাংলা পড়তে এসেছিলেন ওই ছাত্র। অভিযোগ, তিনি হস্টেলে র্যাগিংয়ের শিকার হন। কিছু সিনিয়র তাঁর উপর নানা রকম অত্যাচার করেন বলে দাবি মৃতের পরিবারের। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী এবং ছাত্র দীপশেখর দত্ত ও মনোতোষ ঘোষ।