77th Independence Day

মণিপুরে মহিলাদের উপর নির্যাতন হয়েছে, কিন্তু এখন শান্তি ফিরেছে, লাল কেল্লা থেকে মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর

মঙ্গলবার সকালে ভারতের ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন করতে দিল্লির লাল কেল্লায় পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তাঁর মুখে উঠে আসে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরে হওয়া হিংসার প্রসঙ্গ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৫৯
The women of Manipur have suffered much in recent times, says PM Narendra Modi from Red Fort

৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দিল্লির লাল কেল্লায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার।

অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে মণিপুরের মহিলাদের— এমনটাই মন্তব্য করলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার সকালে ভারতের ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ‌ে পতাকা উত্তোলন করতে দিল্লির লাল কেল্লায় পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তাঁর মুখে উঠে আসে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরে হওয়া হিংসার প্রসঙ্গ। তবে সেখানে বর্তমানে শান্তি বজায় রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

Advertisement

ভাষণের একদম শুরুর দিকে হিংসাদীর্ণ মণিপুর প্রসঙ্গে মোদী বলেন, ‘‘মণিপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। মণিপুরের মহিলাদের উপর অনেক নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু বিগত কয়েক দিন ধরে সে রাজ্যে শান্তি ফিরেছে। দেশ মণিপুরের সঙ্গে আছে। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার মিলে সেই শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করবে।’’

প্রসঙ্গত, গত ২০ জুলাই বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকে মণিপুরকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিবৃতির দাবিতে বিরোধীদের শোরগোলের জেরে বার বার মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন। বিরোধীদের বিক্ষোভে অধিবেশন ক্রমাগত ব্যাহত হয়েছে। বাদল অধিবেশন শুরুর প্রথম থেকেই বিরোধীরা মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবি তুলেছে। তাদের দাবি, গত তিন মাস ধরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত মণিপুর, হিংসাদীর্ণ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১৭০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আহতও হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ, অথচ এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তরফে কোনও বক্তব্য নেই। মাত্র এক বারই সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মোদী বলেছিলেন, ‘‘মণিপুরের ঘটনা দুঃখজনক।’’ তার পর থেকে বিরোধীরা সংসদের অভ্যন্তরে মণিপুর নিয়ে মোদীর বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় বিরোধীদের তরফে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। অনাস্থা বিতর্কের জবাবি ভাষণের সময় মোদীর মুখে উঠে আসে মণিপুর প্রসঙ্গ। লোকসভাতে নিজের আড়াই ঘণ্টার জবাবি ভাষণে উত্তর-পূর্বের রাজ্যের হিংসার জন্য কংগ্রেসকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ ছিল, এত দিন সেখানকার মানুষের স্বপ্নকে গলা টিপে মারা হয়েছে। ওই প্রসঙ্গে ষাটের দশকে মিজোরামে ভারতীয় বায়ুসেনার বোমাবর্ষণের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, মণিপুরে শান্তি ফেরাতে তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, ‘‘মণিপুরে নিশ্চয়ই শান্তির সূর্য উঠবে। মণিপুর আবার নতুন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাবে। মণিপুরের মানুষকে আমার আবেদন, দেশ আপনাদের সঙ্গে আছে। সংসদ সঙ্গে আছে। ওখানে সমস্যার সমাধান হবে।’’

তবে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, মণিপুর প্রসঙ্গে বেশি কথা না বলে সংসদে কেবল কংগ্রেসকে আক্রমণ এবং ঠাট্টাতামাশা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংসদে ভাষণের সময় মণিপুরের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কেন মিতব্যয়ী, তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা করেন বিরোধীরা। মোদী দাবি করেন, অনেক আগেই মণিপুর নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধীদের চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি কেউ। কারণ, তাঁরা চান বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে। বস্তুত, মণিপুর হিংসা এত বড় হয়ে ওঠার নেপথ্যে বিরোধীদের ‘ভূমিকা’ নিয়েও তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী। অভিযোগ করেন মণিপুরবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। সেই মণিপুর প্রসঙ্গ ফিরল স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে। মণিপুরে যে মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে, তা মেনেও নিলেন মোদী। একই সঙ্গে জানালেন, বিজেপি-শাসিত রাজ্যটি এখন শান্ত।

আরও পড়ুন
Advertisement