কলকাতা মেট্রো পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন যাত্রীদের একাংশ। ফাইল চিত্র।
যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে শহরবাসীর অনেকেই মেট্রোকে বাহন হিসাবে বেছে নেন। কিন্তু সেই কলকাতা মেট্রোতে চড়েই ইদানীং দুর্ভোগে পড়ছেন বলে অভিযোগ যাত্রীদের একাংশের। অভিযোগ, সময়জ্ঞান হারিয়েছে মেট্রো। অফিস টাইমে ৬ মিনিট অন্তর মেট্রো চলে। দিনের কোনও সময়ে দু’টি মেট্রোর সর্বোচ্চ ব্যবধান দাঁড়ায় ১৫ মিনিট। কিন্তু ৬ মিনিট তো দূর অস্ত্, তার বেশি সময় পরেও অনেক ক্ষেত্রে মেট্রোর দেখা পাওয়া যায় না। ফলে অতিরিক্ত ভিড় হচ্ছে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতেও দেরি হচ্ছে যাত্রীদের। এমনই অভিযোগ মেট্রো যাত্রীদের একাংশের।
রবিবার দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে রবীন্দ্র সদন স্টেশনে পৌঁছেছিলেন শৌভিক দে নামে এক যুবক। তাঁর গন্তব্য ছিল শ্যামবাজার। স্টেশনের ডিস প্লে বোর্ডে দক্ষিণেশ্বরগামী মেট্রো আসার সময় ছিল দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিট। শৌভিকের অভিযোগ, ১২টা ৫৫ মিনিটে রবীন্দ্র সদন স্টেশনে কোনও মেট্রোই আসেনি। আপনা থেকেই ডিস প্লে বোর্ডে পরের মেট্রোর সময় দেখায়। ১টা ৫ মিনিটে শ্যামবাজার যাওয়ার মেট্রো পান তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়ে যে মেট্রো আসছে না বা মেট্রোর সময় যে বদলাল, তা নিয়ে স্টেশনে কোনও ঘোষণাও করা হয়নি। শৌভিকের মতো এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে অনির্বাণ বসু নামে এক যাত্রীরও। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘অফিস টাইমে ৬ মিনিট অন্তর মেট্রো পাওয়া যায়। কিন্তু সেই সময় অনুযায়ী মেট্রো আসছে না। আপনা থেকেই মেট্রোর সময় বদলে যাচ্ছে ডিস প্লে বোর্ডে। কোনও ঘোষণাও করা হচ্ছে না।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘এর ফলে স্টেশনে অতিরিক্ত ভিড় হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের পর যে মেট্রো আসছে, তাতে অনেক যাত্রীই ভিড়ের জন্য উঠতে পারছেন না। ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে।’’
পিয়ালি মৈত্র নামে এক যাত্রীও মেট্রোর ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রবিবার সকাল ৯টা ৪১ মিনিটে কালীঘাট মেট্রোয় পৌঁছন পিয়ালি। তাঁর গন্তব্য ছিল চাঁদনি চক। পিয়ালির অভিযোগ, ‘‘স্টেশনের ডিস প্লে বোর্ডে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে মেট্রোর সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় মেট্রো আসেনি। সকাল ১০টা ২ মিনিটে ট্রেন পাই। কোনও ঘোষণাও করা হয়নি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটা নতুন নয়। অনেক সময়ই মেট্রো আসার যে নির্ধারিত সময় দেখানো হয় ডিস প্লে বোর্ডে, সেই সময় অনুযায়ী মেট্রো আসে না। পরের সময় অনুযায়ী মেট্রো আসে। এর ফলে সমস্যা হচ্ছে।’’
যদিও মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন যে, সময়সূচি মেনেই মেট্রো চলছে। কোনও ট্রেন বাতিল হয়নি এবং দেরিতে চলছে না। সম্প্রতি কোনও কোনও মহলে খবর ছড়ায় যে, মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ) থেকে কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া) স্টেশনের মধ্যে মেট্রোর যে স্তম্ভ রয়েছে, তার বেহাল অবস্থা। এর জেরে ওই অংশে মেট্রো চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। সোমবার মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, ওই অংশে মেট্রোর স্তম্ভ সুরক্ষিত রয়েছে। রোজই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। নির্দিষ্ট সময়েই মেট্রো চলবে। পরিষেবা বিঘ্নিত হবে না।