বিচারপতির নির্দেশ, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বরের আগে যে সব চাকরিপ্রার্থী বিএড প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁরা চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। — ফাইল ছবি।
প্রাথমিকে চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন বিএড উত্তীর্ণরা। সেই সুযোগের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার তাঁর অন্তর্বর্তী নির্দেশ, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বরের আগে যে সব চাকরিপ্রার্থী বিএড প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁরা চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। তাঁদের জন্য তিনি ‘পোর্টাল’ কিছু দিন খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। যদিও আদালতের পরবর্তী নির্দেশ ছাড়া ওই প্রার্থীদের ফলপ্রকাশ করা যাবে না। তবে যাঁরা আগে আবেদন করেছিলেন, একমাত্র তাঁরাই চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। নতুন করে আবেদন করা যাবে না।
গত বছর প্রাথমিক স্কুলে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষক নিয়োগের কথা ঘোষণা পর্ষদ। গত ২৯ সেপ্টেম্বর তারা নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে জানানো হয়, ডিএলএড প্রশিক্ষণরতরাও অংশ নিতে পারবেন এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। পরে এই পর্ষদের এই নির্দেশ খারিজ করে দেয় বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, প্রশিক্ষণরতরা নন, যাঁরা প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন একমাত্র তাঁরাই অংশ নিতে পারবেন।
চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ পাওয়ার জন্য মৃন্ময় সরকার-সহ ৫০ জন চাকরিপ্রার্থী কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের বক্তব্য, ডিএলএড প্রশিক্ষণ শুধুমাত্র প্রাথমিক স্কুলের জন্য। কিন্তু অনেকে বিএড সম্পূর্ণ করে আবার ডিএলএড-এর প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। ফলে পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে তাঁরা ডিএলএড যোগ্যতায় আবেদন করেন। তখন যদি বলা হত প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করা বাধ্যতামূলক, তবে এই চাকরিপ্রার্থীরা বিএড দেখিয়ে আবেদন করতে পারতেন। পর্ষদের এই ত্রুটির কারণে অনেক প্রার্থী বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।
পর্ষদের আইনজীবী সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিজ্ঞপ্তিতে বিএড এবং ডিএলএড পাশ করা উভয় প্রার্থীকেই সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ফলে প্রশিক্ষণরতরা সুযোগ হারিয়েছেন। এখন নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাঝপথে ডিগ্রি পরিবর্তন খুবই জটিল প্রক্রিয়া। প্রচুর চাকরিপ্রার্থী আবার ভিড় করতে পারেন। এই মুহূর্তে এটা অসুবিধাজনক।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, বিজ্ঞপ্তিতে বলা ছিল, বিএড প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। ফলে এখন এই প্রার্থীদের যোগ্য বলে ধরে নিতে হবে। আপাতত তাঁরা নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবেন। ২১ দিনের জন্য পর্ষদ নিজেদের ওয়েবসাইট খোলা রাখবে। সেখানে গিয়ে যোগ্যতার এই মান পরিবর্তন করতে পারবেন বিএড পাশ করা প্রার্থীরা। তাঁদের এই সুযোগ দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিয়োগ সংক্রান্ত দু’টি মামলা থেকে সরানো হয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। তার পর সোমবার প্রাথমিক নিয়োগের ৪০টি মামলা শোনেন তিনি। তার মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এই নির্দেশ দিলেন।
আগামী ১২ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।