(বাঁ দিকে) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক পড়ুয়ারাই আসেন। সেখানে কোনও পড়ুয়া যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়, তা হলে কী করণীয়? রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছে সে বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে তেমনটাই জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। শনিবারই ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তৃতীয় নোটিস পাঠিয়েছে কমিশন। তারা জানিয়েছে, দ্বিতীয় যে নোটিসটি পাঠানো হয়েছিল, তাতে কর্তৃপক্ষের জবাবে তারা সন্তুষ্ট নয়। সেই কারণেই আবার নোটিস পাঠানো হয়েছে। কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় জানান, এই ঘটনায় কমিশনের তদন্তের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কর্তৃপক্ষ। যাতে কমিশন উদ্বিগ্ন।
স্নেহমঞ্জুকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কমিশনের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, কমিশনের তদন্তের এক্তিয়ার নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলা হয়নি। বরং, তাঁরাই কমিশনের কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছেন। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘কমিশনের তদন্তের এক্তিয়ার নিয়ে আমরা একেবারেই প্রশ্ন তুলিনি। আমরা বলতে চেয়েছি, উচ্চশিক্ষা তো শিশুদের জন্য নয়। সে ক্ষেত্রে, এই ধরনের পরিস্থিতি কী ভাবে এড়ানো যায়? কোনও অপ্রাপ্তবয়স্ক পড়ুয়া যদি আসে, তার জন্য কী ভাবে আলাদা ব্যবস্থা করা যায়? সেটা আমাদের জানানো হোক। ওঁদের তদন্তে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’’
শনিবার যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় নোটিস পাঠিয়ে শিশু সুরক্ষা কমিশন জানিয়েছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জবাবে সন্তুষ্ট নয়। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে যে তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছিল, তার যথাযথ উত্তর আসেনি। পাশাপাশি, হস্টেলের আবাসিকদের সংখ্যা থেকে শুরু করে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি সংক্রান্ত যে তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে চেয়ে পাঠানো হয়েছিল, তা ঠিক ভাবে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ কমিশনের। তাদের আরও অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রেকর্ড যে ভাবে বজায় রাখা উচিত, সেই ভাবে রাখা হয়নি। মানা হয়নি ইউজিসির নিয়মকানুন।
কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আমি আশ্চর্য যে, শিশু সুরক্ষা কমিশন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একেবারেই সচেতন নন। আমরা দ্বিতীয় যে চিঠি পাঠিয়েছিলাম, তার জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। তাই আবার চিঠি পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন যে, ওঁরা রেকর্ড বজায় রেখেছেন। কিন্তু তেমন কোনও প্রমাণ আমরা পাইনি। হস্টেলের আবাসিকদের সংখ্যা এবং র্যাগিং-বিরোধী সেলের তথ্যও ঠিক মতো দেওয়া হয়নি। উল্টে প্রশ্ন করা হয়েছে, আমরা কী ভাবে এর মধ্যে ঢুকতে পারি? ওঁদের অবগতির জন্য জানিয়েছি যে, মৃত পড়ুয়ার ১৮ বছর হয়নি। তাই ওই পড়ুয়া শিশু সুরক্ষা কমিশনের এক্তিয়ারে পড়ে।’’