প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে লালবাজারে তলব করল কলকাতা পুলিশ। আরজি করে নিহত চিকিৎসকের নাম-পরিচয় প্রকাশের অভিযোগে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। যদিও লকেট জানিয়েছেন, লালবাজার থেকে কোনও চিঠি এখনও তাঁর কাছে পৌঁছয়নি।
আরজি করের ঘটনার পর আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। এর মাঝে সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়ো খবর প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কলকাতা পুলিশ এ নিয়ে প্রথম থেকে একাধিক বার সতর্ক করেছে। যাঁরা ভুয়ো খবর ছড়াবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল।
যে কোনও যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতার নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার আইন রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে এ বিষয়ে। কিন্তু তার পরেও সমাজমাধ্যমে মৃত চিকিৎসকের নাম-ছবি এবং পরিচয় বার বার প্রকাশ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। লকেটও প্রথমে এক বার তা প্রকাশ করেছিলেন। তার জেরেই তাঁকে লালবাজারে ডাকা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রবিবার বিকেলে তাঁকে কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে লকেট আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, ‘‘আমি কোনও তলবের চিঠি এখনও হাতে পাইনি। প্রথমে এক বার আমি ভুল করে নির্যাতিতার নাম প্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডল (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে ফেলেছিলাম। কিন্তু তার পর ভুল বুঝতে পেরে সেই পোস্ট মুছে দিয়েছি।’’ এর পর এ প্রসঙ্গে হুগলির তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘হুগলির সাংসদ যে সমাজমাধ্যমে কেঁদেকেটে নাটক করে নির্যাতিতার নাম প্রকাশ করছেন, তিনি কি পুলিশের নোটিস পেলেন? না কি তাঁর কথা শুনতেই পায়নি পুলিশ?’’ লকেটের বক্তব্য, বিরোধীদের তলব করে যে ‘তৎপরতা’ পুলিশ দেখাচ্ছে, তা যদি ঘটনার সময়ে থাকত, তবে এত বড় ঘটনা ঘটত না। সকলেই আসলে এই নৃশংসতার বিচার চাইছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতার নাম প্রকাশ এবং সমাজমাধ্যমে ভিত্তিহীন খবর ছড়ানোর জন্য দুই চিকিৎসককেও তলব করেছে লালবাজার। এ ছাড়া, গত ১৪ অগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে মেয়েদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচির সময় হামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কেও। তিনি জানিয়েছেন, আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে তিনি লালবাজারে হাজিরা দেবেন এবং তদন্তে সহযোগিতা করবেন।