আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সিবিআই দফতরে। —ফাইল চিত্র।
প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরোলেন আরজি কর হাসপাতালের সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ সিবিআই দফতরে যান সন্দীপ। রাত সওয়া ১১টা নাগাদ সন্দীপ সিজিও থেকে বেরোন। শনিবার সকালে সন্দীপ ছাড়াও কলকাতা পুলিশের তিন কর্মীও সিজিওতে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জন আরজি কর পুলিশ ফাঁড়ির ওসি। তবে রাত পর্যন্ত সন্দীপ একাই ছিলেন সেখানে। সিবিআই সূত্রে খবর, রবিবার সকালে সন্দীপকে আবার ডাকা হয়েছে সিজিও কমপ্লেক্সে।
শুক্রবারের পর শনিবার সকালে ফের তলব করা হয়েছিল সন্দীপকে। শুক্রবার বিকেলে তিনি সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। সূত্রের খবর, মাঝরাতে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে শনিবার আবার তলব করা হয়েছিল তাঁকে।সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার সময় বেশ কিছু নথি নিয়ে তাঁকে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা সন্দীপকে কী কী বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি।
শুক্রবার বিকেল ৩টের পর সিবিআইয়ের গাড়িতে চেপে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছেছিলেন সন্দীপ। সূত্রের খবর, তাঁকে রাস্তা থেকে গাড়িতে তোলে সিবিআই। সন্দীপকে আগেই তলব করা হয়েছিল। শুক্রবারই আদালতে সন্দীপের আইনজীবী দাবি করেছিলেন, সিবিআই তলবে হাজিরা দিতে চান সন্দীপ। কিন্তু তিনি নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। এর পর সিবিআই গাড়িতে করে তাঁকে দফতরে নিয়ে যায়। গভীর রাতে বাড়ি ফিরলেও তাঁকে ফের শনিবার সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে আসতে হয়।
আরজি করে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পরেই সন্দীপের নাম প্রকাশ্যে আসে। চিকিৎসক এবং পড়ুয়াদের অভিযোগ ছিল, সন্দীপ অত্যন্ত প্রভাবশালী। এই তদন্ত প্রক্রিয়াকেও তিনি প্রভাবিত করতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। তাঁর পদত্যাগের দাবি উঠেছিল আরজি কর থেকে। এর মাঝে গত সোমবার সন্দীপ সংবাদমাধ্যমের সামনে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন। স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে ইস্তফাপত্র জমাও দেন। আরজি করের অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকের পদ ছেড়ে দেন সন্দীপ।
তার পরেই সন্দীপকে আবার অন্য একটি সরকারি হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। সেখানেও তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে আরজি কর মামলার শুনানি চলাকালীন আদালত সন্দীপকে লম্বা ছুটিতে যেতে নির্দেশ দেয়। তার পর থেকে ছুটিতেই আছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
আদালতের নির্দেশে আরজি করের ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই। সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার তলব করেছিল তারা। সে দিন তিনি হাজিরা দেননি। তার পর শুক্রবার সিজিওতে পৌঁছন। পর পর দু’দিন হাজিরা দিলেন সন্দীপ। রবিবার আবার তাঁকে ডাকা হয়েছে।