সম্ভাব্য যাত্রীদুর্ভোগের আশঙ্কায় বিকল্প ব্যবস্থা তৈরিতে উদ্যোগী হল পরিবহণ দফতর। —ফাইল ছবি।
সিগন্যালিংয়ের কাজের জন্য প্রায় দেড় মাস হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড এবং শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন (কেএমআরসিএল)। এখনও অবশ্য এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তবে সম্ভাব্য যাত্রীদুর্ভোগের আশঙ্কায় বিকল্প ব্যবস্থা তৈরিতে উদ্যোগী হল পরিবহণ দফতর। হাওড়া থেকে শিয়ালদহ হয়ে সল্টলেক পর্যন্ত বিশেষ বাস পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করছে সরকার। পাশাপাশি, ওই সময় বেশি সংখ্যক সরকারি এবং বেসরকারি বাস ও মিনিবাস রাস্তায় নামানোর জন্য বাসমালিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বর্তমানে শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ (গ্রিন লাইন ১) এবং হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডে (গ্রিন লাইন ২) দুই পৃথক সিগন্যালিং ব্যবস্থার মাধ্যমে মেট্রো চলাচল করছে। কিন্তু কেএমআরসিএল চায়, গোটা গ্রিন লাইনে একটিই সিগন্যাল ব্যবস্থা তৈরি করতে। সেই কাজ করতে গেলে গ্রিন লাইন ১ এবং গ্রিন লাইন ২-এ মেট্রো চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। কেএমআরসিএল প্রস্তাব দিয়েছে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত এই দুই শাখায় সম্পূর্ণ বন্ধ করা হোক মেট্রো চলাচল।
গঙ্গাসাগর মেলার দায়িত্ব সেরে বুধবার কলকাতায় ফিরছেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। সাগর থেকে ফিরে তিনি পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বিকল্প ব্যবস্থার বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। ওই সময় পরিবহণ ব্যবস্থার ঘাটতি পূরণে বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠনগুলির সাহায্য চাওয়া হতে পারে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মেট্রো পরিষেবা বন্ধের সময় যাত্রীদের দ্রুত ও সুরক্ষিত যাতায়াত নিশ্চিত করতে হাওড়া, শিয়ালদহ ও সল্টলেকের মধ্যে বিশেষ বাস পরিষেবার পাশাপাশি বিদ্যমান পরিষেবাগুলিকেও আরও বেশি করে কার্যকর করা হবে। এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতর আমাদের কাছে এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে আলোচনার ভিত্তিতে সহযোগিতা করতে রাজি। কিন্তু এ বিষয়ে বেসরকারি বাসমালিকদের কিছু দাবি এবং শর্ত রয়েছে, সেই বিষয়গুলিও পরিবহণ দফতরকে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।’’
হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড হোক বা শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ— প্রতি দিন এই দুই শাখায় প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন। অনেকেই সড়কপথ ছেড়ে মেট্রোপথে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এক লক্ষের বেশি মানুষ প্রতি দিন এই দুই লাইনে যাতায়াত করেন। তাই হুট করে টানা দেড় মাস মেট্রো চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছেন না মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, “এখনও এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কেএমআরসিএলের কাছ থেকে প্রস্তাব এসেছে। আমরা সম্ভাব্য সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি। যাত্রী পরিষেবা আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়। ৪৫ দিনের জন্য মেগা ব্লক দেওয়া সম্ভব কি না খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে যা করা হবে যাত্রীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আগাম জানিয়ে দেবে মেট্রো।”