TMC inner clash in Contai

সমবায় নির্বাচনে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ঘটনায় বিধায়ক অখিল-উত্তমকে ফোনে কঠোর হুঁশিয়ারি মমতার

দলের দুই বিধায়ককে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি বনাম পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিকের গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩০
Chief Minister Mamata Banerjee has issued a stern warning to MLAs Akhil Giri and Uttam Barik regarding Tmc\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s infighting over cooperative elections

(বাঁ দিক থেকে) অখিল গিরি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তম বারিক। —ফাইল ছবি।

কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের দুই বিধায়কের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসক তৃণমূল। সেই ঘটনায় এ বার সেই দুই বিধায়ককে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি বনাম পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিকের গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে গন্ডগোলের ঘটনা ঘটে। রাতেই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ফোন করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের নেতাদের ডেকে পাঠান। বুধবার দুপুরে সুব্রত দক্ষিণ কলকাতায় তাঁর প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের অফিসে বৈঠকে বসেন জেলার নেতাদের নিয়ে। সেখানেই রাজ্য সভাপতির ফোনে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে হাজির নেতাদের উদ্দেশে তিনি পারস্পরিক দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দলের নির্দেশ মেনে কাজ করতে বলেন। কথা বলেন বিবাদমান দুই বিধায়কের সঙ্গেও। গোটা ঘটনায় যে তিনি কতটা ক্রুদ্ধ, মমতা তা বুঝিয়েও দিয়েছেন নেতাদের।

Advertisement

প্রসঙ্গত, বিধায়ক উত্তমের অনুগামীরা বিধায়ক অখিলকে দেখে ‘চোর-চোর’ স্লোগান দিয়েছিলেন। পাল্টা অখিল তাঁদের বোমা মেরে ‘পাঁচ মিনিটে খতম’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন! সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে ফোনে মুখ্যমন্ত্রী দুই বিধায়ককে প্রশ্ন করেন, তাঁদের জন্য দলকে কেন ‘অস্বস্তিতে’ পড়তে হবে? বৈঠকে উপস্থিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘দিদির প্রশ্নের মুখে পড়ে উত্তম আর অখিল থতমত খেয়ে যান। দিদির বকুনি শুনে দু’জন জবাবে কোনও কথা বলেননি।’’ মমতা দুই বিধায়ককে সর্তকবার্তা দিয়ে বলেন, যদি তাঁরা দলের কথা শুনে এবং মেনে না চলতে পারেন, তা হলে তিনি কড়া ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন। পাশাপাশি, মমতা তাঁদের জানিয়ে দেন, কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত ডিরেক্টর পদে যে প্যানেল ঠিক করে দেবেন, তা-ই মেনে নিতে হবে সকলকে। কেউ গোঁজ প্রার্থী দাঁড় করালে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সংশ্লিষ্ট নেতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছর কালীঘাটে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এ বার থেকে ‘দলবিরোধী’ কাজ করলে সংশ্লিষ্ট নেতাকে শোকজের মুখে পড়তে হবে। পর পর তিন বার শোকজ হলে দল থেকে সংশ্লিষ্ট নেতাকে বহিষ্কার করা হবে। সে কথাও বৈঠকে নেতাদের স্মরণ করিয়ে দেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। ঘটনাচক্রে, গত শুক্রবারই দলবিরোধী কাজের জন্য তৃণমূল সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছে প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন এবং প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামকে।

উল্লেখ্য, কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে মঙ্গলবার ১৫টি আসনে মোট ২৬টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। তার মধ্যে চার জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথে। বাকি ১১টি আসনে দলের মধ্যেই লড়াই হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই সমবায় নির্বাচনে দলের রাজ্য সভাপতিকে নজর রাখতে বলেছেন মমতা। কোনও ক্ষেত্রে যদি দলের নির্দেশ অমান্য হয়, তা হলে যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে বিষয়েও সুব্রতকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ৩১ জানুয়ারি ওই ব্যাঙ্কের মোট ১৫ জন ডিরেক্টর নির্বাচিত হবেন। মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় যাতে কোনও ‘অপ্রীতিকর’ ঘটনা না ঘটে, সে দিকে লক্ষ রাখতে কাঁথি এবং এগরা মহকুমার অন্তর্গত সব ক’টি থানার আইসি এবং ওসি-সহ বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও পারস্পরিক সংঘর্ষ এবং বচসা এড়ানো যায়নি। ৩১ তারিখ কোনও বড়সড় সংঘর্ষের ঘটনা এড়াতে আগে থেকেই পদক্ষেপ করলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

Advertisement
আরও পড়ুন