Watgunge Murder Case

ওয়াটগঞ্জের মৃতার দেহের নিখোঁজ অংশ গঙ্গায় ফেলে দেন ভাসুর? এলাকার সিসি ক্যামেরা দেখছে পুলিশ

দুর্গাকে খুনের অভিযোগে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁর ভাসুর নীলাঞ্জনকে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সহযোগিতা করছেন না তিনি। বয়ান বদলে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৫২
image of house

ওয়াটগঞ্জের যে বাড়িতে (বাঁ দিকে) দুর্গার দেহ কাটা হয়েছে, সেখানে গেলেন ফরেন্সিক দফতরের ডিএনএ বিভাগের কর্মীরা। (ডান দিকে) সেই পরিত্যক্ত ব্যারাক। — নিজস্ব চিত্র।

ওয়াটগঞ্জে নিহত মহিলার দু’টি হাত, পায়ের পাতা এবং বুকের নীচের অংশের খোঁজ নেই। পুলিশ মনে করছে, দুর্গা সরখেলের দেহের ওই অংশ নদীতে ফেলে দিয়েছেন অভিযুক্ত নীলাঞ্জন সরখেল। সুইং ব্রিজ এবং দইঘাটের মাঝের কোনও জায়গায় ফেলা হয়েছে। এই এলাকায় বসানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, মৃতার স্বামী তাঁর দাদা, তথা খুনে অভিযুক্ত নীলাঞ্জনের থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। তা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। সে কারণে খুন করা হতে পারে দুর্গাকে। ওয়াটগঞ্জের যে বাড়িতে দুর্গার দেহ কাটা হয়েছিল, শুক্রবার সেখানে পৌঁছেছেন কলকাতার ফরেন্সিক দফতরের ডিএনএ বিভাগের কর্মীরা। পুজোর ঘরও ঘুরে দেখা হচ্ছে। দুর্গার পরিবার তন্ত্রসাধনার অভিযোগ করেছিল। যেখানে দেহ মিলেছিল, সেখানেও গেল ফরেন্সিক দল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুর্গাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁর ভাসুর নীলাঞ্জনকে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সহযোগিতা করছেন না তিনি। এখনও পর্যন্ত নীলাঞ্জন বার বার একই কথা বলছেন, ‘‘আমি কিছু জানি না।’’ পাশাপাশি, পুলিশের আরও অভিযোগ, বয়ান বদলে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তিনি।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ধারালো কিছু দিয়ে খুন করা হয়েছে দুর্গাকে। খুনের জন্য দা বা কাটারি ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওয়াটগঞ্জের পরিত্যক্ত যে ব্যারাকে দুর্গার খণ্ডিত দেহ মিলেছিল, সেখান থেকে তাঁর বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৬০০ মিটার। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ি থেকে সাইকেলে চাপিয়ে সেই দেহ ঘটনাস্থলে এনেছিলেন অভিযুক্ত। দু’বারে। তাদের আরও দাবি, বস্তায় ভরে আনা হয়েছিল দেহ। ভোর ৫টার মধ্যে সেরে ফেলা হয়েছিল কাজ। পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্গা খুনের তদন্তে ইতিমধ্যেই কিছু সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার হয়েছে। দুর্গাদের বাড়ির ঠিকানা ২৩বি, হেমচন্দ্র স্ট্রিট। সেই বাড়ির উল্টো দিকের বাড়ির সামনে সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। সেই ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন তদন্তকারীরা। তাতে এক বার দেখা গিয়েছে, হাতে প্লাস্টিক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন নীলাঞ্জন। পরে আবার বাড়িতে ঢুকতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। পুলিশের ধারণা, ওই প্লাস্টিক ব্যাগে করেই সরানো হয়েছে দেহাংশ। দেহের কিছু অংশ তিনি জলে ফেলে দিয়েছিলেন। কোথায় ফেলেছেন, তা খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুর ৩টে নাগাদ ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার সত্য ডাক্তার রোডের পাশে পাঁচিল ঘেরা একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগে দুর্গার দেহাংশ পেয়েছিল পুলিশ। ২০০৭ সালে দুর্গার বিয়ে হয় ওয়াটগঞ্জের বাসিন্দা ধোনি সরখেলের সঙ্গে। দম্পতির এক ছেলে রয়েছে। দশম শ্রেণিতে পড়ে সে। বাড়িতে দুর্গার স্বামী এবং ছেলের পাশাপাশি ভাসুর, ননদ, শাশুড়িও থাকেন। দুর্গার পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির তরফে তাদের মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর জানানো হয়নি। সংবাদমাধ্যমে এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের খবর দেখে এবং গত দু’দিন ধরে দুর্গার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে পরিবারের লোকেরা মঙ্গলবার থানায় যান।

আরও পড়ুন
Advertisement