Watganj Body Recovered

তন্ত্রসাধনার কারণেই বলি দেওয়া হয়েছিল ওয়াটগঞ্জের দুর্গাকে? মৃতার পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ

বাড়ি থেকে সাইকেলে চাপিয়ে সেই দেহ ঘটনাস্থলে এনেছিলেন অভিযুক্ত। দু’বারে। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। তাদের আরও দাবি, বস্তায় ভরে আনা হয়েছিল দেহ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪৫
image of murder

মৃত দুর্গা সরখেলের পরিবার আনল নতুন অভিযোগ। — ফাইল চিত্র।

বলি দেওয়া হয়েছিল ওয়াটগঞ্জের দুর্গা সরখেলকে? তাঁর পরিবারের তরফে তন্ত্রসাধনার উল্লেখ করে এমন অভিযোগই তোলা হচ্ছে। পুলিশ সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। তাদের পাল্টা অভিযোগ, অভিযুক্ত নীলাঞ্জন সরখেল সহযোগিতা করছেন না। বুধবার এসএসকেএমে দুর্গার দেহাংশের ময়নাতদন্ত হয়। তার রিপোর্টে বলা লেখা হয়েছে, ধারালো কিছুর আঘাতে মৃত্যু হয়েছে দুর্গার।

Advertisement

ওয়াটগঞ্জের পরিত্যক্ত যে ব্যারাকে দুর্গার খণ্ডিত দেহ মিলেছিল, সেখান থেকে তাঁর বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৬০০ মিটার। বাড়ি থেকে সাইকেলে চাপিয়ে সেই দেহ ঘটনাস্থলে এনেছিলেন অভিযুক্ত। দু’বারে। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। তাদের আরও দাবি, বস্তায় ভরে আনা হয়েছিল দেহ। ভোর ৫টার মধ্যে সেরে ফেলা হয়েছিল কাজ। পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্গা খুনের তদন্তে ইতিমধ্যেই কিছু সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার হয়েছে। দুর্গাদের বাড়ির ঠিকানা ২৩বি, হেমচন্দ্র স্ট্রিট। সেই বাড়ির উল্টো দিকের বাড়ির সামনে সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। সেই ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন তদন্তকারীরা। তাতে এক বার দেখা গিয়েছে, হাতে প্লাস্টিক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন নীলাঞ্জন। পরে আবার বাড়িতে ঢুকতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। পুলিশের ধারণা, ওই প্লাস্টিক ব্যাগে করেই সরানো হয়েছে দেহাংশ। বৃহস্পতিবারই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

জেরার সময় নীলাঞ্জনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, গোটা জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব জুড়েই নির্লিপ্ত ছিলেন নীলাঞ্জন। তাঁর একটাই প্রশ্ন, সিসিটিভি ফুটেজে থেকে কি কিছু প্রমাণ হয়? নীলাঞ্জনের দাবি, ওই ফুটেজ দেখে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার দুপুর ৩টে নাগাদ ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার সত্য ডাক্তার রোডের পাশে পাঁচিল ঘেরা একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগে দুর্গার দেহাংশ পেয়েছিল পুলিশ। ২০০৭ সালে দুর্গার বিয়ে হয় ওয়াটগঞ্জের বাসিন্দা ধোনি সরখেলের সঙ্গে। দম্পতির এক ছেলে রয়েছে। দশম শ্রেণিতে পড়ে সে। বাড়িতে দু্র্গার স্বামী এবং ছেলের পাশাপাশি ভাশুর, ননদ, শাশুড়িও থাকেন। দুর্গার পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির তরফে তাদের মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর জানানো হয়নি। সংবাদমাধ্যমে এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের খবর দেখে এবং গত দু’দিন ধরে দুর্গার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে পরিবারের লোকেরা মঙ্গলবার থানায় যান।

প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, সরখেল পরিবারে ঝামেলা-অশান্তি লেগেই থাকত। প্রায়ই বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি, কান্নাকাটির শব্দ আসত। কিন্তু বাড়ির সদস্যেরা কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। তাই পড়শিরা ঝগড়াঝাটির কারণ বুঝে উঠতে পারতেন না। তাঁদের দাবি, বাড়িতে কাউকে মারধর করা হত, এই বিষয়টি তাঁরা বুঝতে পারতেন। সোমবার রাতে বা মঙ্গলবার সকালে অবশ্য তেমন চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যায়নি বলেই দাবি প্রতিবেশীদের একাংশের।

আরও পড়ুন
Advertisement