রবিবার কেষ্টপুরে আরজি করের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের কর্তা দেবাশিস সোমের বাড়িতে সিবিআই, রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালের একাধিক কর্তার বাড়িতে হানা দিল সিবিআই। রবিবার সকালে কেষ্টপুর, হাওড়া, এন্টালিতে কেন্দ্রীয় সংস্থার একটি করে দল গিয়েছে। আরজি করের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের কর্তা দেবাশিস সোমের বাড়ি রয়েছে কেষ্টপুরে। এন্টালিতে রয়েছে হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠের বাড়ি। সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। এ ছাড়া, হাওড়ার একটি জায়গায় বিপ্লব সিংহ নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়েছে সিবিআই। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহকারী হিসাবে কাজ করেন। আরজি করে আর্থিক অনিয়মের যে অভিযোগ করেছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি, তাতে এঁদের নাম রয়েছে। বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। বেলগাছিয়ার জেকে ঘোষ রোডে এক ক্যাফে মালিকের বাড়িতে গিয়েছে সিবিআইয়ের অন্য একটি দল। এ ছাড়া, সিবিআইয়ের একটি দল আরজি কর হাসপাতালেও গিয়েছে বলে খবর। অন্তত ১৫ জনের বাড়িতে সিবিআই গিয়েছে।
আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, আদালতের নির্দেশে তার তদন্ত করছে সিবিআই। শনিবারই সেই মামলায় প্রথম এফআইআর করা হয়েছে। নিজ়াম প্যালেসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দুর্নীতি দমন শাখা ওই এফআইআর দায়ের করেছে। তার পর রবিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। সকালে সিবিআইয়ের একাধিক দল সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়েছিল। একটি দল গিয়েছে বেলেঘাটায় হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে।
গত ৯ অগস্ট সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ ওঠে, ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে তাঁকে। সেই নিয়ে হইচই পড়েছে গোটা দেশে। এই আবহে অভিযোগ উঠেছে, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে। তার তদন্তের জন্য গত ১৬ অগস্ট রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছিল। নেতৃত্বে ছিলেন আইপিএস অফিসার প্রণব কুমার। রাজ্য পুলিশের সিটের উপর আস্থা নেই, এই দাবিতে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তভার ইডিকে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় শুক্রবারই বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের একক বেঞ্চ জানিয়েছিল, একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি আরও জটিল ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে। এর পরেই সিবিআইকেই আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তভার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত।
আরজি কর কলেজ ও হাসপাতালে একাধিক বেনিয়মের তত্ত্ব হাই কোর্টে তুলে ধরা হয়েছে। মর্গ থেকে দেহ উধাও হওয়ার থেকে শুরু করে ‘মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ— পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি। সেই অভিযোগে সন্দীপ, দেবাশিস, বিপ্লবদের নাম রয়েছে।