হাথরস-কাণ্ডের তদন্ত করা সিবিআই অফিসার এ বার আরজি করের ঘটনার তদন্তকারী দলে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তভার কলকাতা হাই কোর্ট সিবিআইকে দেওয়ার পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সদর দফতর থেকে কয়েক জন আধিকারিক এসেছেন কলকাতায়। এ বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দলে যোগ দিলেন সিবিআই অফিসার সীমা পাহুজা। তিনি এর আগে উত্তরপ্রদেশের হাথরস ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত করেছিলেন।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। সোমবার তাঁকে চতুর্থ বারের জন্য ডেকে পাঠানো হয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। গত ৯ অগস্ট চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্তে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে। যদিও সিবিআইয়ের হাতে এখনও কেউ গ্রেফতার হননি। তার মধ্যেই জানা গেল, হাথরসের ঘটনায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী দলের নেতৃত্ব দেওয়া তৎকালীন ডিএসপি সীমাকে আরজি করের ঘটনার তদন্তকারী দলে যুক্ত করা হয়েছে।
২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর উচ্চবর্ণের চার জনের লালসার শিকার হতে হয়েছিল হাথরসের ১৯ বছরের দলিত তরুণীকে। উচ্চবর্ণের চার ব্যক্তি দলিত তরুণীটিকে গণধর্ষণের পর একটি মাঠে ফেলে পালায়। বাড়ির লোকেরা যখন তরুণীকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করেন, তখন তাঁর কাঁধ ও গোপনাঙ্গে ভয়ানক আঘাত। ১১ দিন লড়ে শেষ পর্যন্ত দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় হাথরসের দলিত তরুণীর। তাঁর মৃত্যুর পর শুরু আর এক নাটক। তরুণীর দেহ একটি অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরিবারের হাতে তুলে না দিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ও সরকারি কর্তাদের উপস্থিতিতে রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে দেওয়া হয় নির্যাতিতা তরুণীর মৃতদেহ। ঘটনা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় সারা দেশে।
সিবিআই আধিকারিক সীমা এক সময়ে গাজ়িয়াবাদে কর্মরত ছিলেন তদন্তকারী সংস্থার অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরোয়। হাথরস তো বটেই, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অন্দরে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। সিবিআই আধিকারিক হিসাবে তাঁর কাজের জন্য ২০১৪ সালের ১৫ অগস্ট পুলিশ মেডেল পান সীমা। সাহসী এবং নির্ভীক অফিসার হিসাবে পরিচিতি রয়েছে সীমার।
হাথরস-কাণ্ডে সিবিআইয়ের ১৪ সদস্যের বিশেষ দলের নেতৃত্ব দেওয়া ছাড়াও হিমাচল প্রদেশের গুড়িয়া মামলার তদন্তের ভার ছিল সীমার উপরে। সংশ্লিষ্ট মামলার সমাধান করেছিলেন তিনি।