গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সামনে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু, সাঁতরাগাছি থেকে ‘নিখোঁজ’ হন ছেলে। এমনই অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল হাওড়ার এক পরিবার। পুলিশ জানিয়েছিল, তাদের হেফাজতে রয়েছেন রজতশুভ্র নন্দী নামে ওই যুবক। সোমবার শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত বন্ডে ইস্টবেঙ্গলের ওই সমর্থককে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। ছাড়া পাওয়ার পর রজত জানান, আন্দোলন করা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। এই ভাবে মানুষের কণ্ঠরোধ করা যায় না। ছেলের পাশে দাঁড়ালেন তাঁর বাবাও।
ডার্বি বাতিল এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় বিচারের দাবিতে রবিবার পথে নেমেছিলেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং মহমেডান ক্লাবের সমর্থকেরা। ওই আন্দোলন ঘিরে হুলস্থুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েক জনকে আটক করে পুলিশ। অন্য দিকে, হাওড়া থেকে আটক করা হয় ২৬ বছরের রজতশুভ্রকে। তাঁকে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ থানায় আটকে রেখেছিল। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ব্যক্তিগত বন্ডে মুক্তি দেয় পুলিশ। হাওড়ার সাঁতরাগাছি থানার শরৎপল্লি এলাকার বাসিন্দা রজত ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক। তিনি জানিয়েছেন, রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আইটি সেল’ থেকে তাঁকে ফোন করে বলা হয়েছিল, তিনি যেন জমায়েতে না যান। কারণ, তাঁরই নেতৃত্বে একটি ‘বড় আন্দোলন’ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। রজতশুভ্রের মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। তার কিছু ক্ষণ পরেই বিগার্ডেন এবং সাঁতরাগাছি থানার পুলিশ এসে একই অভিযোগে দুপুর ৩টে নাগাদ বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যান বলে দাবি ওই যুবকের। তার পর রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁকে থানায় বসিয়ে রাখা হয়। তার পর বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে লক আপে রেখে দেয়। কিন্তু বাড়ির লোকজনকে কোনও খবরই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
সোমবার উচ্চ আদালতে দ্বারস্থ হয় রজতশুভ্রের পরিবার। তার কিছু ক্ষণ পরেই বাড়ির লোকজনের কাছে থানা থেকে একটি ফোন যায় এবং রজতকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রজত বলেন, ‘‘আন্দোলন করা তো মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। এই ভাবে মানুষের কণ্ঠরোধ করা যায় না। অন্যায় হলে আবার পথে নামব।’’
রজতের বাবা অনিমেষ নন্দী বলেন, ‘‘কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া সন্দেহের বসে ছেলেকে লকআপে রেখে হেনস্থা করা হল। এটা নিন্দনীয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আগামী দিনে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে শামিল হলে ছেলের পাশেই থাকব।’’