Justice Abhijit Gangopadhyay

চার ব্যাগ ঠাসা মেধাতালিকা এসেছিল আদালতে, দেখেই পর্ষদে ফেরত পাঠালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

টেট পরীক্ষার্থীদের বাড়তি নম্বর দেওয়ায় যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল, তা খতিয়ে দেখতেই গত ১৬ অগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে কাট অফ মার্কসের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:৫৭
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পর্ষদ নির্দেশ মেনে তালিকা জমা দেয়নি।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পর্ষদ নির্দেশ মেনে তালিকা জমা দেয়নি। ফাইল চিত্র।

অনিয়ম কতটা, তা বুঝতে টেট পরীক্ষার্থীদের কাট অফ মার্কসের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার আদালতে চার ব্যাগ মেধাতালিকা পাঠিয়েওছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তা দেখা ইস্তক ফেরত পাঠিয়েছেন পর্ষদের দফতরে।

কেন ফেরত পাঠিয়েছেন, তার কারণ ব্যাখ্যা করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তিনি টেটের মেধাতালিকা চাননি। নম্বর বিভাজন-সহ মেধাতালিকা চেয়েছিলেন। যাতে বোঝা যায়, বাড়তি নম্বর পাওয়ার যোগ্য কারা ছিলেন। কিন্তু পর্ষদ সেই তালিকা জমা দেয়নি। মোট নম্বর অনুযায়ী যে তালিকা আদালতে পেশ করা হয়েছে তা দেখে কিছুই বোঝা সম্ভব নয়।

Advertisement

গত ১৬ অগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে কাট অফ মার্কস (অর্থাৎ যত নম্বর পেলে নিয়োগের যোগ্য বলে গণ্য করা হবে প্রার্থীকে) এবং সংরক্ষণ তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। হলফনামার আকারে ওই তথ্য চেয়ে পাঠানো হয় পর্ষদের কাছে। জবাবে বৃহস্পতিবার পর্ষদের তরফে চারটি ব্যাগে ভরে দু’টি নিয়োগ প্রক্রিয়ার মেধাতালিকা জমা দেওয়া আদালতে। ২০১৬ এবং ২০২০ সালের ওই দুই নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছিল ২০১৪ সালে হওয়া টেটের ভিত্তিতে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি ওই নথি গ্রহণ না করলেও জানিয়েছেন, নথিগুলি নষ্ট করতে পারবে না পর্ষদ। এগুলি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, টেট পরীক্ষায় আসা ভুল প্রশ্নপত্রের জন্য ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল। তবে এই নম্বর ২০১৬ সালের নিয়োগের সময় দেওয়া হয়নি। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় দু’দফায় নিয়োগ হয়। ২০১৬ সালের পর আবার ২০২০ সালে। বাড়তি নম্বর দিয়ে ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ করা হয় এই দ্বিতীয় দফাতে। অভিযোগ, এই দ্বিতীয় দফার নিয়োগেই অনিয়ম হয়েছে। যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে বাড়তি নম্বর পেয়ে কাট অফ মার্কস পেয়েছেন অযোগ্য প্রার্থীরাও। টেট পরীক্ষার্থীদের একাংশ এই নিয়েই মামলা করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টে। মঙ্গলবার তার শুনানিতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় টেট পরীক্ষার্থীদের কাট অফ মার্কস এবং সংরক্ষণের তালিকা চেয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে যে ভুল ছিল, তা প্রকাশ্যে আসে ২০১৮ সালে। ২০১৮-র ১৩ অক্টোবর ছ’টি ভুল প্রশ্ন নিয়ে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। সেই মামলা এখন সুপ্রিম কোর্ট হয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারাধীন। মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদউস শামিম বলেন, ‘‘মামলাটি বিচারাধীন থাকাকালীনই প্রাথমিকের ৭৩৮টি শূন্যপদে নিয়োগের ঘোষণা করে পর্ষদ। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় অনেক যোগ্য প্রার্থী বাড়তি নম্বর পাওয়া থেকে বাদ পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মামলাকারীরা।’’

আরও পড়ুন
Advertisement