R G Kar Protest

বিটি রোডের ধারে কোথায় আরজি করের নির্যাতিতার ঠিকানা? গুগ্‌ল ম্যাপ চিনিয়ে দিচ্ছে ‘তিলোত্তমা মোড়’!

গুগ্‌লে শুধু ‘নির্যাতিতার বাড়ি’ লিখে সার্চ দিলেও অনেক কিছুর সঙ্গে আসছে গুগ্‌ল ম্যাপের বিকল্পও। সেখানে বিটি রোডের উপরের সেই ট্রাফিক মোড়ের ছবি আসছে। তার পাশে লেখা ‘ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক’।

Advertisement
পিনাকপাণি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৩১
Google map also showing address of victim at RG Kar Issue

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

চিকিৎসক মেয়েটি ফুসফুস রোগ বিশেষ়জ্ঞ হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছে অগস্টের সেই রাতে! আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষিত এবং খুন হওয়া চিকিৎসক পড়ুয়ার বিচার চেয়ে এখন পথে নেমেছে সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ চলছে রাজ্য থেকে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে। প্রতিবাদীদের মুখে ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার এখন নানা নাম। এ বার তাঁর বাড়ির কাছের পরিচিত মোড়টার নামই হয়ে গেল ‘তিলোত্তমা মোড়’। কলকাতার দিক থেকে বিটি রোড ধরে যে মোড়ে পৌঁছে ডান দিকে কিছুটা এগোলেই নির্যাতিতার বাড়ি, সেই মোড়ের নামই এখন ‘তিলোত্তমা মোড়’। কে বা কারা ওই মোড়ের মাথায় ‘তিলোত্তমা মোড়’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে রেখেছে তা জানা নেই। তবে গুগ্‌ল ম্যাপ ওই একই নামেই চেনাচ্ছে বিটি রোডের উপর পরিচিত মোড়াটাকে।

Advertisement

গুগ্‌ল ম্যাপ খুলে ‘তিলোত্তমা মোড়’ লিখলেই লোকেশনে দেখাচ্ছে বিটি রোডের উপরের সেই জায়গা। যেখান থেকে অদূরেই নির্যাতিতার বাড়ি। আবার গুগ্‌লে শুধু ‘নির্যাতিতার বাড়ি’ লিখে সার্চ দিলেও অনেক কিছুর সঙ্গে আসছে গুগ্‌ল ম্যাপের বিকল্পও। সেখানে বিটি রোডের উপরের সেই ট্রাফিক মোড়ের ছবি আসছে। তার পাশে লেখা ‘ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক’।

গুগ্‌ল ম্যাপে যে কোনও জায়গার নামই বদলে দেওয়া যায়। তবে সেটা সব সময়ে স্থায়ী হয় না। কী ভাবে স্থায়ী করা যায় তার নিয়মও রয়েছে বলে জানালেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত গুগ্‌ল লোকাল গাইড শৌনক দাস। বিষয়টি তাঁর নজরে পড়েনি জানিয়ে শৌনক বলেন, ‘‘যে কেউ করতে পারেন এটা। পছন্দের নাম দেওয়ার জন্য ‘অ্যাড নিউ প্লেস’ অপশনে গিয়ে এটা করা যায়। তবে কোনও দোকানের নাম করাটা যতটা সহজ ততটা কোনও এলাকার নামের ক্ষেত্রে নয়।’’ প্রত্যন্ত এলাকার ক্ষেত্রে গুগ্‌ল সাধারণ ভাবে খুব বেশি কড়াকড়ি না-করলেও শহরাঞ্চলে সেটা সঠিক কি না তা বিবেচনা করা হয় বলেই শৌনকের দাবি। অতীতে যাঁর নামে কোনও রিপোর্ট গুগ্‌লের কাছে জমা পড়েনি, তাঁরা এই ধরনের বদল আনার ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ পান।

এ ক্ষেত্রে কী হয়ে থাকতে পারে? শৌনক বলছেন, ‘‘কেউ নামবদল করলে বা নতুন নাম দিলে গুগ্‌ল তা ভেরিফিকেশন করে। এই কাজটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমেই হয়ে থাকে। দু’-তিন বার ভেরিফিকেশন করার পরে ম্যাপে বদল এসে যায়।’’ তবে গুগ্‌ল সাধারণ ভাবে পুরসভার ম্যাপ অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে এলাকার নাম দেখায়। বদলের ক্ষেত্রে এআই-এর মাধ্যমে ভোটও হয়। শৌনক বলেন, ‘‘অনেকে ব্যবহার করলে এবং সম্মতি দিলে এটা হতেই পারে। গুগ্‌ল নিশ্চিত ভাবেই বিষয়টির কথা অনেককে পাঠিয়ে আপত্তি রয়েছে কি না সেটা যাচাই করেছে।’’ এর পরেও এটা স্থায়ী হয়ে যাবে এমনটা অবশ্য বলা যায় না। পরবর্তী সময়ে মানুষ কতটা ব্যবহার করছে সেটা দেখেই সিদ্ধান্ত নেয় গুগ্‌ল। শৌনকের দাবি তেমনটাই।

এ সব ক্ষেত্রে গুগ্‌ল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় ‘গাইড’দের মতামত নেন। শৌনক কি মত দেবেন? তাঁর কথায়, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমার কোনও অসুবিধা নেই। তবে যে নামে বেশি পরিচিতি সেটাই করা উচিত। ওই নামে মানুষ চেনেন কি না সেটাই প্রাথমিক ভাবে দেখা হয়। পুরসভা কোনও আলাদা নাম দিয়েছে কি না সেটাও দেখে নিতে হবে। পুরসভা যদি এটা মেনে নেয় তবে স্থায়ী হয়ে যাবে।’’

একই সঙ্গে শৌনক জানান, এখন বাংলাদেশে অনেক রাস্তার নামবদল চলছে। অনেক মানুষের ভোটের মাধ্যমেই গুগ্‌ল সেটা করছে। শৌনক বলেন, ‘‘এখানেও যদি সেটা হয়, তবে আমাকেও অ্যাপ্রুভ করতে হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement